দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃকলকাতা থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে অবস্থিত লাল মাটির দেশ বাঁকুড়া। নদ,নদী,পাহাড়,জঙ্গল সব নিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন্ডিত বাঁকুড়া।জেলাটি বরাবরই মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত আর বিখ্যাত টেরাকোটা মন্দিরের জন্য।চলুন জেনে নিই রেল পুতুলের ইতিহাসঃ এখানকার বাসিন্দারা ছিলো কষ্টসহিষ্নু।রেলব্যবস্থা চালু হবার পর এলো এদের জীবনে এল আমুল পরিবর্তন। এরা মাটি দিয়ে যে পুতুলগুলো বানাত সেগুলো হলো জো,ষষ্ঠী, থানের ঘোরা,মনসার চালি ইত্যাদি। তাদের ভাবনায় এলো নতুন সংযোগ “রেল পুতুল “।
শিল্পীরা সবসময় নতুন যুগের নতুন চেতনাকে তার শিল্প ভাবনায় ফুটিয়ে তুলতে চায়। মাটির পুতুলের মতোই এটি মাটি দিয়েই বানানো হতো। কিন্তু এর তাৎপর্যটা হলো-মহিলারা পরপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন দুটি হাত পরস্পরের কঁধে রেখে। ঠিক রেলগাড়ির বগির মত।এটাই পুতুল রূপে গড়া ।এই শিল্প ভাবনায় শিল্পী দুটি জিনিসকে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রথমটি রেল আর দ্বিতীয়টি এখানকার মেয়েদের। পিছিয়ে পরা মেয়েরা আজ দল বেঁধে বেরিয়ে পরল স্বাবলম্বী হতে ঐ রেলগাড়ীর মাধ্যমে। পু উ্ উ্ ঝি ক্ ঝি ক্ আওয়াজ পেলেই এরা বেরিয়ে যেতে নিজ নিজ কাজে।
কেউ অন্য গ্রামে রুপচর্চার কাজে যেতো কেউ বা ধান বুনতে যেতো আবার কেউ যেতো রানীগঞ্জের কয়লাখনি তে কাজ করতে।এরা যাতে চলতি গাড়িতে পরে না যায় সেই জন্য পরস্পর কাঁধে হাত দিয়ে শক্ত ভাবে ধরে দাঁড়াতো।মেয়েরা সেদিন শুধুমাত্র রেলগাড়িকে অবলম্বন করেই বাইরের দুনিয়া পা রাখতে পরেছিল। তাই বলাযেতে পারে বাঁকুড়ার মেয়েদের বগি হিসাবে সাজিয়ে শিল্পী তাদেরকে আগামী দিনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস হিসাবে রেল পুতুল তৈরী করেছিলেন।যার কারিগর মেয়েরা নিজেরাই।এ পুতুল পূজিত হয়না ঠিকই কিন্তু নাগরিক চেতনার মাধ্যম রুপে আজ বিখ্যাত।