দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার সংকটজনক পরিস্থিতির অফেরতযোগ্য অবনতি হয়েছে। রোববার সকালে এমনটাই জানালেন দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকের চিকিৎসকরা।
সৌমিত্রবাবুর মেডিক্যাল দলের এক চিকিৎসকের বিবৃতি মতে, ‘‘আমাদের সবরকমের চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া সাড়া দিচ্ছে না। আগের থেকেও (সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থা) খারাপ। তাঁকে সবধরনের সাপোর্টে রাখা হয়েছে এবং নিজের জীবনের জন্য শেষ লড়াই লড়ছেন তিনি।’’
ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন যে, কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি প্রবীণ অভিনেতার স্নায়ুতন্ত্রে ভয়ংকর প্রভাব ফেলেছে। তার জেরে ‘সব চেষ্টা’-কে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। গত ৪০ দিন ধরে নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিয়োলজি, ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন, আইডি বিশেষজ্ঞ-সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের একটি দল তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘স্টেরয়েড, ইমিউনোগ্লোবুলিন (অ্যান্টিবডি), কার্ডিয়োলজি, অ্যান্টি-ভাইরাল থেরাপি, অনাক্রম্যতা – সবরকমের চেষ্টা করেছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দুঃখিত যে উনি সাড়া দিচ্ছেন না। আমরা শেষ চেষ্টা করছি। ওঁনার পরিবারও সেটা মেনে নিয়েছেন। উনি প্রায় এমন জায়গায় আছেন, যেখান থেকে ফেরা কার্যত অসম্ভব।’
গত বুধবার সৌমিত্রবাবুর শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার বা ট্রাকিওস্টমি করা হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে (ট্রাকিয়া) ট্রাকিওস্টোমি টিউব স্থাপন করা হয়ে থাকে। যাতে নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস হয়। সেই অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, পুরোপুরি সফলভাবেই প্রবীণ অভিনেতার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল বলে জানানো হয়েছিল।
পরদিন তাঁর ‘প্রথম দফার’ প্লাজমাফেরেসিস (প্লাজমা থেরাপি) করা হয়েছিল। বাহ্যিক কোনও রক্তক্ষরণ হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, ‘যদিও তাঁর রক্তচাপ সামান্য পড়েছিল। যা সহজেই ঠিক করা সম্ভব হয়েছে। বিকেলে আমরা আবারও সিটি স্ক্যান করেছি। তাতে কোনও অস্বাভাবিকতা মেলেনি। তিনি এখন স্থিতিশীল আছেন এবং তাঁর রক্তচাপও এখন ঠিকঠাক আছে।’ কিন্তু শুক্রবার সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এখন তাঁকে ১০০% অক্সিজেন সাপোর্ট এ রাখা হয়েছে। স্নায়ুর সনবেদনসিলটা নেই বললেই চলে, এই গভীর কোমা থেকে একমাত্র ঈশ্বরের করুণা ছাড়া আর কোনও কিছুই ‘ফেলুদা’ কে বের করে নিয়ে আসতে পারবে না।