দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ মাথায় সাদা ফেজ টুপি, শীর্ণ গালে মেঘের মতো সাদা দাড়ি। নেটিজেনরা হঠাৎ করে যাকে ভাইরাল ভিডিওতে খুঁজে পেয়েছে সে নয়ের দশকের এক গায়ক। যার প্রথম গানেই আসমুদ্রহিমাচল মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেছিল। তার প্রথম গান আর অ্যালবামের বয়স হতে চলল পঁচিশ বছর। মেহমুদ মকশুদ আলি এই হল তার আসল নাম। বাবার নাম আমরা সকলে একবাক্যে চিনি, তিনি বলিউডের স্বর্ণযুগের কমেডিয়ান, প্রোডিউসার, ডিরেক্টর মেহমুদ। যার মেহমুদ স্টুডিও একসময়ে মুম্বাইয়ের সবথেকে বড় স্টুডিও ছিল।
তবে কি লাকি আলি স্টার কিড? না না, লাকি তার লাক্-কে অগ্রাহ্য করেই গানের ভুবনে এসেছিলেন। তারপর সময়মতো হারিয়েও গিয়েছেন। তবে আজ কি এমন ঘটল যাতে নেটপাড়ায় এত হইহই তার গান নিয়ে। লাকি নিজেও সে বিষয়ে জানেন না। এক সাক্ষাৎকারে লাকি জানিয়েছেন যে তিনি বোঝেননি যে তার গানের এক টুকরো অংশ ভাইরাল হয়েছে। সম্ভবত যে ক্যামেরাম্যান রেকর্ড করছিলেন সেই সেই আনপ্লাগ গানটি নেটে ছেড়ে দিয়েছিল। তাঁর ছেলে সেই কথা জানায়।
আরো পড়ুনঃ চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা জর্জ ক্লুনি
১৯৯৬ সালে ‘sunho’ অ্যালবামে আত্মপ্রকাশ করেন লাকি আলি। তারপরে আর কয়েকবছর ফিরে তাকাতে হয়নি লাকিকে। ভাগ্যের চাকার যখন ঘোরে তখন তাকে নিয়ে যায় বহুদূর, রাকেশ রোশনের ‘কাহো না প্যার হে’তে আত্মপ্রকাশ করে বলিউডে সাড়া ফেলে দেয় লাকি। তারপরে বেশ কয়েকবছর নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠে সে বলিউডের। মাঝে শ্যাম বেনেগালের সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু বেশিদিন কমার্শিয়াল জগতে থাকতে পারেনি সে। লাকি সরে আসে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ঝকমারি আলোর থেকে। আজো লাকিকে জিজ্ঞেস করলে সে স্পষ্ট জানায় যে এই নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই।


তবে লাকি এখন করেন কি? লাকি শহর কোলাহল থেকে অনেকদূরে নিভৃতে বেঙ্গালুরুতে নিজের ফার্মহাউসে বাগান সাজাচ্ছেন। এই চাষের জমিটি তাঁর বাবা কিনেছিল। এখন সেখানে অর্গানিক ফসল চাষের সাথে সাথে পরিযায়ী পাখিদের সান্নিধ্য অনুভব করছেন। তাঁর বক্তব্য তিনি কৃষক নন। তবে নিজের হাতে সবজি চাষ করে ভিশন ভাল লাগছে। তবে সঙ্গীতের সাধনা থেমে নেই। দেশ বিদেশের সঙ্গীতের অনুরাগীদের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন লাকি।
তার ‘ও সনম্’-এর রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি নেটিজেনরা। তার মধ্যেই লাকি জানিয়েছেন যে খুব শীঘ্রই তিনি নতুন গান নিয়ে ফিরছেন। এবার থেকে তিনি নাকি মাস গেলে এক-দুটো ছোট ভিডিও পাবলিশড করবেন। তাতে সাড়া দিয়েছে তার গুণমুগ্ধরা। লাকিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তার লকডাউন কেমন চলছে? তাতে লাকি অমায়িক ভাবে হেসে বলেন, ‘বিউটিফুল, আমি একাকীত্ব ভালোবাসি’। এমনিতেও আমি সারা বছর নিজের বিছানাটাকে খুব মিস করি। কারণ বিদেশের বিলাসবহুল বিছানা তে সেই মজা টা নেই যেটা ঘরের বিছানায় রয়েছে। তাই এখন এই লকডাউনে একটি সুকুন পেয়েছি।
লাকির গর্ব যেমন তার সুর তার গানের কলি তেমনই তার সবুজ বাগান যেখানে সাইবেরিয়া থেকে পরিযায়ী পাখিরা উড়ে আসে এই মরশুমে। লাকি যেন শ্যামল মিত্রের গানের সার্থক রূপ-‘গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে ভেবেছিল একটি পাখি’। লাকির কথায় বাকিটা ক্রমশ প্রকাশ্য।