দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সরাসরি সঙ্ঘাতের আবহে গ্রেড ওয়াই নিরাপত্তা পাচ্ছেন কঙ্গনা রানওয়াত। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিল কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর তাঁকে এখন থেকে ১১ জন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী পাহারা দেবেন। এবং এই নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে অন্তত দু’জন সেনাকর্মী বলবত্ থাকবেন।
উল্লেখ্য, কঙ্গনার সাথে মহারাষ্ট্র সরকারের সংঘাতের সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। এমনিতেই সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্যে ‘নেপটিজম’, ‘ড্রাগ কার্টেলের’ প্রসঙ্গ এনে বলিউড তথা মুম্বাই পুলিশ কে টুইটার এবং সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাত্কারে তুলোধোনা করছিলেন এই প্রখ্যাত নায়িকা। এইরকম একটি মন্তব্যে তিনি মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন। আর তাতেই চটেন বিতর্কিত শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত।
সঞ্জয় রাউত ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ হয়ে সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় বিবৃতি দিচ্ছিলেন। এমনকি তিনি সুশান্তের পরিবার নিয়েই এর আগে আলটপকা মন্তব্য করেছিলেন, এবার তিনি পাল্টা কঙ্গনাকে ‘হারামখোর’ বলেন। শুধু তাই নয় ‘POK’ বিতর্কে স্পষ্টতই দু’ভাগ বলিউড। এতদিন চুপ করে থাক বলিউডের প্রথম সারির অনেকেই বলতে থাকেন, যেমন মুম্বইকে কদর্য ভাবে আক্রমণ করছেন কঙ্গনা অন্যদিকে তাঁরা রাউতের মন্তব্যও যে খুব কুৎসিত সে কোথাও বলছেন। এমন কী সঞ্জয় ফতোয়া জারি করেন যে, কঙ্গনার আর মুম্বই আসার দরকার নেই, মুম্বাই আসলে শিবসেনা’র মহিলা সেল তাঁকে দেখে নেবে।
অন্যদিকে কঙ্গনাও হার মানার পাত্রী নন। রাউতের উত্তর ফিরিয়ে তিনিও সরাসরি বলেন, “আমার বাকস্বাধীনতা রয়েছে। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যাওয়ার অধিকারও রয়েছে।” সেই সাথে এও জানিয়ে দেন তিনি আগামী ৯’ই সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে পা রাখছেন। পাশাপাশি সঞ্জয় এর ‘হারামখোর’ মন্তব্যর জন্যে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ এলে, সঞ্জয় বলেন, আগে কঙ্গনা মহারাষ্ট্রবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিক তারপর তিনি ভাববেন।
শুধু সঞ্জয় রাউত নিন, সম্প্রতি মানালির বাড়ীতেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কঙ্গনা। তাই এই উত্তপ্ত আবহে মুম্বইয়ে পা রাখার পরে কঙ্গনার নিরাপত্তায় যাতে কোনো খামতি না থাকে সেই কারণে পদ্মশ্রী কঙ্গনাকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিচ্ছে কেন্দ্র।
উল্লেখ্য সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্যে উত্তাল হয়েছে দেশ। নেটিজেন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদের কেউ কেউ আলোচনা করছিলেন যে লকডাউনের মন্দা সময়ে একটু শিরোনামে আসার চেষ্টা, আবার কেউ কেউ বলেছেন কেন্দ্র ঘনিষ্ঠতার জন্যে এই সব। যদিও কঙ্গনা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভোট রাজনীতিতে তার এখনই কোনও উৎসাহ নেই।
দিন কয়েক আগেই বলিউডের মাদক চক্র নিয়ে মুখ খুলে ভিকি কৌশল, রণবীর সিং, রণবীর কাপুরের মতো তারকারদের নামও নিয়েছেন তিনি। বলেছেন তাঁদের ড্রাগ টেস্ট করানো উচিত। আর তাঁর এই মন্তব্যেই বলিউডের এক অংশ সহ মহারাষ্ট্র সরকারের মধ্যে বিক্ষোভের জন্ম হয়েছে আর সেখান থেকেই এই বাকযুদ্ধ যা ক্রমে ‘মণিকর্ণিকা; খ্যাত নায়িকার জীবনের পরিপন্থী হয়ে উঠছে।