দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ দুপুর ৩ টের সময় কঙ্গনা একটি টুইটে ভারতের একটি বিশিষ্ট সংবাদপত্রের একটি খবর কে ট্যাগ করে লিখেছেন -“ওয়াও! দুর্ভাগ্যবশত বিজেপি এমন কাউকে রক্ষা করছে যে মাদক এবং মাফিয়া র্যাকেট ভাংচুর করেছে, বিজেপির উচিত শিবসেনার গুন্ডাদের আমার মুখ ভাঙ্গতে দেওয়া, ধর্ষণ অথবা প্রকাশ্যে আমাকে হত্যা করা, নেহীন সঞ্জয়জি? মাফিয়াদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীকে তারা কিভাবে রক্ষা করার সাহস পায়!!!”
সেই সাথে আজ বিকেল ৫ টা ২০ নাগাদ তিনি আরও একটা টুইট করেন যেখানে তিনি লিখেছেন-“কিছুক্ষণ আগে আমি মহামান্য মহারাষ্ট্রের গভর্নর শ্রী ভগৎ সিং কোশিয়ারি জির সাথে দেখা করি। আমি তার কাছে আমার দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেছি এবং একই সাথে আমাকে ন্যায়বিচার দেওয়ার অনুরোধ করেছি যে এটা সাধারণ নাগরিক এবং বিশেষ করে এই সিস্টেমের প্রতি মেয়েদের বিশ্বাসকে পুনরুদ্ধার করবে।”
উল্লেখ্য আজ ওই সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে মহারাষ্ট্রের বিতর্কিত সাংসদ সঞ্জয় রাউত এর কিছু মন্তব্য ছাপা হয় যেখানে তিনি কঙ্গনার উদ্দেশ্যে পুনরায় বিরূপ এবং পরস্পর বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন।
রবিবার শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে অভিনেত্রী মুম্বাইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সাথে তুলনা করা সত্ত্বেও বিজেপি কঙ্গনা রানাউতকে সমর্থন করছে। সেনার মুখপত্র ‘সামানা’-তে তার সাপ্তাহিক কলাম রোখহোক-এ রাউত আরও দাবি করেছেন যে মুম্বাইয়ের গুরুত্ব কমানোর একটি পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা রয়েছে, এবং শহরকে ক্রমাগত অপমান করা সেই ষড়যন্ত্রের অংশ।
“এটা একটা কঠিন সময় যখন মহারাষ্ট্রের সকল মারাঠি জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত,” রাউত বলেন।
তিনি বলেন, রানাউতকে সমর্থন করে এবং সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় তার অবস্থানের মাধ্যমে বিজেপি উচ্চবর্ণের রাজপুত এবং ক্ষত্রিয় ভোটে বিহার নির্বাচনে জিততে চায়।
রাউত বলেন -“এটা করার সময়, মহারাষ্ট্রকে অপমান করা হয় কিনা তাতে কারো কিছু যায় আসে না। যে ভাবে রাজ্য অপমানিত হয়েছে, তাতে মহারাষ্ট্রের কোনও নেতাই যেন দুঃখ পাননি।”
সামানের নির্বাহী সম্পাদক রাউত জিজ্ঞেস করেছেন “একজন অভিনেত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করেন এবং রাজ্যের জনগণের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত নয়, এটা কি ধরনের একতরফা স্বাধীনতা?” ।
তিনি আরও জিজ্ঞাসা করেন যে- “যখন শহরে তার অবৈধ নির্মাণ, যাকে সে পাকিস্তান বলে অভিহিত করে, তখন সে ভেঙ্গে ফেলা কাঠামোটিকে রাম মন্দির বলে অভিহিত করে। যখন অবৈধ নির্মাণের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয় তখন আপনি কাঁদছেন। এটা কি ধরনের খেলা?”
উল্লেখ্য গত ৯ তারিখ সেনা নির্দেশিত বৃহন্মুম্বাই পৌরসভা পালি হিলসে অবস্থিত্ কঙ্গনার ‘মণিকর্ণিকা’ অফিসটি অবৈধ নির্মাণ ঘোষণা করে মাত্রই ২৪ ঘন্টার নোটিশেই ভেঙে দেয়। সেই সাথে কঙ্গনার নিরাপত্তা’র জন্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়োজিত ‘ওয়াই’ ক্যাটাগরি নিরাপত্তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি এই শিবসেনা সাংসদ।
প্রসঙ্গত, গত ১৪’ই জুন মুম্বাইএর নিজ বাসভবনে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়, উঠতি তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের। এরপর থেকেই একে একে এই মামলাতে মুম্বাই পুলিশের গাফিলতি, মহারাষ্ট্র সরকারের অতি তত্পরতা সহ এই সেপ্টেম্বরে সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী ও তার ভাই শৌভিকের জেল যাত্রা, এই সব নিয়েই টুইটারে সরব হয়েছিলেন কঙ্গনা।
সম্প্রতি সেই মামলাতে ইডি, CBI আর এনসিবি এক যোগে কাজে নামতেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে আসতে থাকে যার পরিনাম স্বরূপ বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী সহ বিভিন্ন মানুষের সাথে নিষিদ্ধ মাদক রাখা ও সেবন করার মত বিষয় সামনে উঠে আসে। ইতিমধ্যে, সাংবাদিক গ্রেপ্তার সহ, কঙ্গনার অফিস ভাঙ্গা ইত্যাদি নিয়ে সমালোচিত হচ্ছে মহারাষ্ট্র সরকার। এমনকি কঙ্গনার সমর্থণে মহারাষ্ট্রের করণি সেনাদের তরফ থেকেও এনসিপি সরকারের স্বরাষ্ট্র মংত্রীকে প্রাণ নাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
এইসব বিষয় নিয়ে পাল্লা হালকা শিবসেনা সম্প্রতি শেখর সুমনের পুত্র অধ্যয়ন সুমনের ২০১৭ সালের একটি ইন্টারভিউ কে কেন্দ্র করে কঙ্গনার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ মাদক নেওয়া ও মাদক নিতে প্ররোচিত করার অভিযোগ এনে কঙ্গনার বিরুদ্ধে পুনরায় আক্রমণ শানায়। যার উত্তরেই কঙ্গনা এই মন্তব্য করেছেন তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে।
উল্লেখ্য, এই অফিস ধ্বংসের জবাবে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশ বলেছিলেন, উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারের উচিত কঙ্গনা রানাউতের পরিবর্তে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোযোগ দেওয়া। এই মূহুর্তে দেশে করোনা সংক্রমণে দেশের মধ্যে শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। সেখানে অ্যাক্টিভ করোনা আরজিইর সংখ্যা ২,৭৯,৭৬৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৯,১১৫ জনের।