ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:সনাতন ধর্মের অন্যতম জনপ্রিয় দেবতা জগ্গনাথদেব।ওনার নাম শুনলেই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কথা মনে পরে।যার টানে শুধু ভারতবর্ষ কেন বিদেশ থেকেও বহুমানুষ ছুটে আসে।ওড়িশা রাজ্যে অবস্থিত পুরী শহরটি।পুরী গিয়ে জগন্নাথ দর্শন করনেনি এমন মানুষ কমই আছেন। তাছাড়া জগন্নাথ দেবের যেকোন মন্দিরে বা পটে একই চিত্র দেখা যায় যে ওনার বিগ্রহে হাত নেই। দাদা বলরাম ও বন সুভদ্রারও হাত ছাড়া বিগ্রহই আমরা লক্ষ্য করেছি।আজ জেনে নিন এমন অসম্পূর্ণ বিগ্রহ সৃষ্টির রহস্য।
সনাতনধর্মের বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এগুলি মাটি, পাথর অথবা ধাতু দিয়ে বানানো। লোহা,তামা,রুপো,সোনা প্রভৃতি ধাতু দিয়ে মূর্তি গুলি বানানো হয়ে থাকে। কিন্তু জগ্গনাথ,বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ বানানো কাঠ দিয়ে যা সত্যি রহস্যের।
আরো পড়ুনঃ
এমন বিগ্রহ সৃষ্টির রহস্যঃ
ভগবান বিষ্ণুর অবতার মানা হয় জগ্গনাথকে।বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিলেন রাজা ইন্দ্রদুম্ন। একদিন তিনি ভগবান বিষ্ণুর মন্দির নির্মাণের জন্য গভীর ধ্যানে বসলেন এবং সপ্নাদেশে জানতে চাইলেন ঠিক কি ভাবে তিনি মন্দির ও বিগ্রহ বানাবেন। ভগবান তাঁকে আদেশ দেন যে পুরীর কাছে একটি নদীতে একটি কাঠের টুকরো ভেসে যাচ্ছে সেই দিয়েই যেন বানানো হয় বিগ্রহ। তিনি তাঁর আদেশ মত গিয়ে দেখলেন সত্যি একটি কাঠের গুঁড়ি ভেসে যাচ্ছে। সেটা নিয়ে এসে তিনি তা দিয়ে বিগ্রহ বানাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু কারিগর যতবার কাঠে হাত দিচ্ছেন ততবার কাঠটি ভেঙে যাচ্ছে। ভারি সমস্যায় পরলেন রাজা।
সমস্যার সুরাহা করতে এলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা।তবে তিনি একটি শর্ত দিলেন রাজাকে, যে একটি ঘরে নির্জনে তিনি কাজটি করবেন,কাজ শেষ না হবার আগে পর্যন্ত কেউ ঐ ঘরে প্রবেশ করতে পারবেনা। সেই শর্তে রাজি হলেন ইন্দ্রদুম্ন।কিছু দিন কাজ করার পর ঘরটি থেকে আর কোনো শব্দ আসছেনা দেখে রাজার স্ত্রী বিচলিত হয়ে পরলেন এবং রাজাকে বলেন সবঠিক আছে কিনা তা একবার খুলে দেখতে। রাজাও বিশ্বকর্মার কথা অবাধ্য করে ঘরটি খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। গিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নেই পরে আছে অসম্পূর্ণ বিগ্রহ। সেই বিগ্রহে তখনও হাত পা তৈরি হয়নি। অসম্পূর্ণ বিগ্রহ নিয়েই রাজা পূজা শুরু করেন। সেই থেকে জগ্গনাথদেবের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পরে।