লেখক: ড. সুমন্ত কুমার খাঁড়া (সহকারী অধ্যাপক , রামকৃষ্ণ মণ্ডল ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন)
প্রথম দৃশ্য
(স্থান- শিবলোক। আজ মহালয়া । শিবলোকে আজ খুশির হাওয়া। কয়েকদিন পরেই দুর্গা সপরিবারে বাপের বাড়ী যাবে। সেই নিয়েই পরিবারের সদস্যরা জমিয়ে এক সাথে গল্প করছে । লক্ষ্মী, সরস্বতী শাড়ি নিয়ে মেতে রয়েছে। গণেশ আর কার্তিক মর্ত্যলোকে বন্ধুদের ফোন করা শুরু করে দিয়েছে। দুর্গার ব্যাগ গোছানো শেষ। কদিন পরেই তাকে যেতে হবে, তাই স্বামীর সঙ্গে দুটো কথা বলে নিচ্ছে।)
দুর্গা– যাক বাবা, ব্যাগটা অন্তত গোছানো হলো । প্রতিবার এই ব্যাগ গোছানো নিয়েই সমস্যা হয়। কোনো বার টাকার ব্যাগটা ফেলে যাই তো কোনোবার সাজার জিনিস। তাই এবার লিস্ট করে সব গুছিয়ে নিয়েছি । এবার আর সমস্যা হবে না।
শিব – পূজো তো এখনও দেরি আছে। তা তুমি এখন থেকেই ব্যাগ গুছিয়ে ফেল্লে!
দুর্গা- উফ্, তোমার এতে কি অসুবিধা হচ্ছে শুনি?
শিব – না মানে..
দুর্গা– থাক, আর মানে মানে করতে হবে না। সারা বছর এই পাহাড় পর্বতে কাটিয়ে একটু ক’দিনের জন্য বাপের বাড়ি যাব, সেটাও তোমার সহ্য হচ্ছে না। (ফুঁপিয়ে কান্না ) আমি জানি , আমি একটু ভাল থাকি, তা তুমি চাও না।
শিব– অ্যাই দেখো দেখো, আরে কাঁদো কেন १ আমি কি আর এমন বলেছি, শুধু বলেছি যে – এখন থেকেই ব্যাগ গুছিয়ে ফেল্লে – তাতেই এই!
দুর্গা– থাক, তোমার আর ব্যাখ্যা করে লাভ নেই। ওই ভূত-প্রেত- গুলোর সঙ্গে থেকে থেকে তোমার এই অবস্থা। মন-টন বলে তোমার আর কিছু নেই।
শিব– ওরে বাবা, দুর্গা আবার ক্ষেপেছে।
দুর্গা– (রেগে গিয়ে) কী বললে? কী ?
শিব– না, ও কিছু নয়। আমি বলি কি, আজ তো মহালয়া , তুমি বরং চুপি চুপি এখন একটু মর্ত্যলোক থেকে ঘুরে এসো । দেখে এসো যে তোমার যাওয়ার জন্য তারা কী আয়োজন করেছে।
দুর্গা– (আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে) বলছো! তাহলে এখনই যাই। এখন তো ভোর রাত। এখন সবাই ঘুমোচ্ছে। এখন গেলে কেউ টের পাবে না। আর সঙ্গে নন্দী, ভৃঙ্গীকে নিয়ে যাচ্ছি। ওরা আজ আমার বডিগার্ড হিসাবে থাকবে।
শিব– তাই যাও, আর তাড়াতাড়ি ফিরে এসো ।
দ্বিতীয় দৃশ্য
(স্থান- মর্ত্যলাক। একটি রাজনৈতিক দলের সভা মঞ্চ। দলের নাম ‘কল্পতরু পার্টি’। আগামীকালই এখানে কল্পতরু নেতা-কর্মীরা পার্টি সম্মেলন করবে। মঞ্চ বাঁধা প্রস্তুত। হরি ও জগা গ্যালন গ্যালন মদ গিলে এই মঞ্চ পাহারা দিচ্ছে। ভোরের দিকে ওরা একটু ঘুমিয়ে পড়েছে। এদিকে শিবলোক থেকে দুর্গা মা, নন্দী ও ভৃঙ্গী আসছে এদিকেই।)
দুর্গা– আচ্ছা নন্দী, কোথায় যাই বলতো প্রথমে?
নন্দী– মা, বলি কি, ওই যে মাঠের ধারে একটা বড় প্যান্ডেল বাঁধা হয়েছে, দেখছি ওটার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। চলুন মা, আগে ওখানে যাই।
দুর্গা– চল, চল ।
ভৃঙ্গী– এ কি! এখানে তো পূজোর কিছুই নেই। কাদের সব ছবি আটকানো । এরা কারা মা?
দুর্গা– (রেগে গিয়ে) তা আমি কি করে বলবো! তোদের সাথে তো আমিও এই এলাম।
ভৃঙ্গী– Sorry Mother, please forgive me!
দুর্গা– ইস, আবার ইংরাজী বলা হচ্ছে।
ভৃঙ্গী– ( মাথা চুলকে) আসলে HBO, STAR MOVIES – এ English Cinema গুলো দেখে দেখে শিখেছি।
নন্দী– তুই থামবি। বখে গেছিস দেখছি।
ভৃঙ্গী– যা বাবা!
(এদের হট্টগোলে হরি ও জগার ঘুম ভাঙে। টলতে টলতে এদের সামনে এসে দাঁড়ায়।)
হরি– অ্যাই, তোরা কে রে?
জগা– ওমা, এ তো কোন বড়লোক বাড়ীর বউ রে। কত গয়না পরে আছে। সঙ্গে আবার দুটো চাকর রয়েছে দেখছি।
নন্দী– অ্যাই, আমরা চাকর নই।
ভৃঙ্গী– ভদ্র ভাবে কথা বল। নইলে ..
হরি– নইলে, নইলে কি করবি রে শালা?
দুর্গা– ছিঃ, আমার সামনে এমন কথা বলতে তোদের লজ্জা করে না ! জানিস আমি কে?
জগা– (একটু ভয় পেয়ে) কে তুমি?
দুর্গা– আমি দেবী দুর্গা।
হরি– দুর্গা ! হা হা , বলি ঢপ মারার আর জায়গা পাওনি? ইনি নাকি দেবী দুর্গা !
দুর্গা– তোদের বিশ্বাস হচ্ছে নাতো? এই দেখ.. (বলেই মা দুর্গা দেবী মূর্তি ধারণ করলেন)
জগা, হরি – মা আমাদের ক্ষমা করো মা। আমরা তোমার অধম সন্তান মা। আমাদের ক্ষমা কর। (বলেই মায়ের পা ধরে ক্ষমা চায় ।)
দুর্গা– আচ্ছা, আচ্ছা, ক্ষমা করলুম। কিন্তু তোরা এই সব ছাই, পাঁশ খাস কেন?
হরি– কি করব মা, দুঃখে খাই।
দুর্গা– এত দুঃখ কেন? আর এই প্যান্ডেল কিসের ?
জগা– এটা আমাদের পার্টির প্যান্ডেল । হিঃ হিঃ! কাল ঘুটঘুটানন্দ নেতা বক্তৃতা দেবেন। সেই আমাদের সব দুঃখ দূর করবে বলেছে। তুমি তো আর দেখলে না মা।
দুর্গা– মানে? আমি না দেখলে তোদের কে দেখে?
জগা– তুমি দেখো! হা, হা, হা! আসে তো বছরে একবার। তাও আসো আনন্দ করতে । তুমি কি করে দেখবে আমাদের ! আমাদের দুঃখ কষ্টের কোনো খোঁজ রাখো ? রাখো না ।
হরি– এই যে ব্রহ্মদেব জগৎ আর মানুষ সৃষ্টি করলেন। ভালো কথা। কিন্তু প্রথমেই তিনি বড় ভুল করলেন। আর তার জন্য কত মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে জানো?
দুর্গা– (বিস্ময়ে) ব্রহ্মদেব ভুল করেছেন! কি ভুল?
হরি– মানুষের জন্মের সাথে সাথেই মানুষকে তো একটা আইডেন্টিটি কার্ড ব্রহ্মদেব দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি দিলেন না । জানো মা, এমন দিন আসছে যে ভোটার কার্ড, NRC কার্ড না থাকলে আমরা নাকি দেশের নাগরিকই নয়।
জগা– তাহলে আমরা এলাম কোথা থেকে? জানো মা, এর জন্য একটা সিম কার্ড তুলতেও কত সমস্যা!
হরি– আবার দেখো, দেশ ভাগের সময় যারা সমস্যায় পড়ে বা একটু ভাল থাকবে বলে এক দেশ থেকে অন্য দেশে এসেছে, তারা কি করে ভোটার কার্ড, NRC কার্ড পাবে?
জগা– আমরা তো সবাই এই পৃথিবীরই বাসিন্দা। তাহলে এতো বিভাজন কেন মা ?
হরি– যদি জন্মানোর সাথে সাথেই ব্রহ্মদেব সবাইকে একটা Universal Identity Card দিয়ে দিতেন, তাহলে এত সমস্যা হতোই না ।
দুর্গা- তাইতো Universal Identity Card দেওয়াটা উচিৎ ছিলো ।
হরি– আরও আছে মা, আরও সমস্যা আছে। পূজোর দিনে তো তোমাকে কিছু বলতে পারি না। তাই আজ যখন সুযোগ আছে বলেই দিই।
জগা– অবশ্য মায়ের আর কি দোষ বল! মাইক আর ঢাকের শব্দে যা শব্দ দূষণ হয় তাতে মায়েরই কান ঝালাপালা। আমাদের প্রার্থনা মা শুনবে কি করে বলতো!
নন্দী– অ্যাই, তোরা এবার চুপ করবি?
হরি– চুপ, একদম কথা বলবি না নন্দী। অ্যাই জগা, ওকে একটা রামের বোতল দে । ও চুপ করে যাবে।
জগা– আচ্ছা তাই দিচ্ছি। এইনে তোরা এটা গেল। আর চুপ করে থাক। মা – ছেলের মধ্যে কথা বলিস না।
ভৃঙ্গী-নন্দী – ঠিক আছে ভাই ।
দুর্গা– তোরা কি বলছিলি?
হরি– তুমি আমাদের কিছু দাও নি।
দুর্গা– মানে?
জগা– মানে বোঝো না? এই যে তোমার এত বছর পূজা করলাম। কি পেলাম?
হরি– কিচ্ছু পাইনি।
দুর্গা -কেন? তোরা ভাল থাকবি, হাসিখুশি থাকবি – এই আশীর্বাদ করলাম যে!
হরি– ধূর, ওতে কি হবে? আমরা তো ভালো নেই, হাসিমুখ তো দূরের কথা!
দুর্গা– তাহলে বল, কি চাস তোরা?
জগা– একটা B.P.L. কার্ড দাও মা।
হরি– চাকরির যা বাজার! আমাকে একটা SC/ST/O.B.C সার্টিফিকেট দাও।
দুর্গা– (চরম বিস্ময়ে) এগুলো কী রে?
জগা– হায় ,তুমি এটাও জানো না মা!
হরি– মা কি করে জানবে জগা? তুই বরং মাকে বুঝিয়ে বল ।
জগা– B.P.L. কার্ড থাকলে রেশন থেকে চাল, গম, ডাল, চিনি, তেল আরও কত কি বিনাপয়সায় অথবা কম পয়সায় পাওয়া যায়। আবার প্রতি মাসে কিছু ইলেকট্রিক ফ্রি।
হরি– কেন, এখন তো আবার B.P.L. কার্ড হোল্ডার পরিবারের জন্য Health Insurance এরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জগা– জানো মা, বিশ্বকর্মাকে কত করে বল্লাম, বাবা, একটা ঘরের বন্দোবস্থ করে দাও। দিলে না।
হরি– ওই B.P.L. কার্ড থাকলে সরকার পুরো ফ্রিতে ঘরও করে দিচ্ছে শুনলাম ।
নন্দী– তাহলে আমায় একটা B.P.L. কার্ড দাও না ভাই।
হরি– চোপ, মদ খাচ্ছ, মদ খাও। কৈলাসে তো দিব্যি আছো।
নন্দী– আর দিব্বি! মাথায় ছাদ নেই গো ভাই। খুব ঠান্ডা লাগে। তাছাড়া একটা পার্সোনাল রুম থাকলে একটু শান্তিতে থাকা যেত। কৈলাসে কোন Privacy নেই। ওই ভূত, প্রেত গুলোর সঙ্গেই..
দুর্গা– নন্দী ,মার খাবি?
নন্দী– না মা। আমরা বরং মদ খাই। এগুলো কৈলাসের ভাঙের থেকে ভালো ।
হরি– জানো মা, ওই SC/ST/O.B.C সার্টিফিকেট থাকলে খারাপ রেজাল্ট করলেও চাকরি পাওয়া যায়।
হরি– তুমিই বল, এসব কি ঠিক ? আর্থিক ভাবে দুর্বলদের চিহ্নিত করে সার্টিফিকেট দাও ঠিক আছে। কিন্তু যারা সত্যিই আর্থিক ভাবে দুর্বল নয়, তারাও কেন অতিরিক্ত সুবিধা পাবে?
জগা– তাছাড়া ধরো, কেউ রিজার্ভেশন সার্টিফিকেটের জোরে চাকরি পেল। তার ৫০,০০০ টাকা মাসিক বেতন। কিন্তু তার ছেলে কেন ওই SC/ST/ O.B.C সার্টিফিকেট পাবে? এটা কি ঠিক?
হরি – অবশ্য General গুলোও ফাঁকিবাজ হয়েছে। সবাই অবশ্য নয়।
দুর্গা– এসব জানতাম না তো!
জগা– আচ্ছা মা, এখন তো সব শুনলে। এখন B.P.L. কার্ডটা দাও দেখি।
হরি– আর আমাকে হয় SC না হয় ST অথবা OBC সার্টিফিকেট দাও।
দুর্গা– আমি এসব দিতে পারব না। তোরা মন দিয়ে পড়। চাকরি পাবিই।
জগা– কি বলছ মা, শুধু পড়লেই আর চাকরি হয় না।
দুর্গা– মানে?
জগা– জানো মা, S.S.C তে প্রায় ১২০০০-১৫০০০ শিক্ষক পদ ভ্যাকেন্সি থাকলেও পরীক্ষা দেয় প্রায় ৫ লক্ষ ২০ হাজার।
হরি– তাহলে তুমিই বলো, বাকিরা কি করবে ? আর এখন সরকার এমন চালাক যে তারা পরীক্ষা নেবে ,কিন্তু নিয়োগ করবে না । এমন কাজ করবে যে কোর্টে কেস হবে, তারপর বলবে কেস না মিটলে আমরা নিয়োগ করবো কি করে ! এভাবেই বছরের পর বছর কেটে যায় !
দুর্গা– সে তো বুঝলুম। কিন্তু তোরা এখানে কি করছিস?
হরি– নেতা ঘুটঘুটানন্দজীর সেবা। তিনি সমাজসেবী। তিনি কল্পতরু পার্টির বড় নেতা। তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন যে আমাদের BPL / SC / ST / OBC সার্টিফিকেট দেবে। চাকরিও দেবে।
দুর্গা– ওরে আমার বোকা ছেলে । তোদের কথা মতোই বলি, SSC তে ১২০০০-১৫০০০ ছেলে-মেয়ে চাকরি পাবে, তাহলে বাকি ৫ লক্ষ ছেলে-মেয়ের চাকরি হবে কি করে? ওই ঘুটঘুটানন্দও সবাইকে চাকরি দিতে পারবে না। ওরা চাকরি দেওয়ার নাম করে তোদের ব্যবহার করছে। নিজের কাজ হয়ে গেলে ঘুটঘুটানন্দ তোদের চিনতেও পারবে না ।
জগা– তাই তো, এটা তো ভেবে দেখিনি।
হরি– কিন্তু B.P.L. কার্ডটা তো পাবো , সেটা এই বাজারে অনেক ।
জগা– তুমি তো আর কিছু দিলে না।
দুর্গা– (অভিমানে) ঠিক আছে, আমি যখন কিছু দিতে পারিনি, তখন আমি আর আসব না।
জগা– (মুখ কাচুমাচু করে, চোখের কোনে জল) না মা, এমন কথা বোলো না।
দুর্গা– কেন রে? আমি তো কিছুই দিতে পারি নি ।
হরি– (কাঁদতে-কাঁদতে) তোমাকে কিছু দিতে হবে না মা। তুমি শুধু আমাদের মাঝে এসো । আমরা খেতে পাই বা না পাই, চাকরি পাই বা না পাই, BPL/ SC/ST/OBC সার্টিফিকেট পাই বা না পাই, পুজোর এই কটা দিন আমরা সবাই আনন্দে মেতে উঠি।
হরি– মা, এটাই আমাদের কাছে অনেক। সারাবছর তোমার প্রতীক্ষাতেই তো আমরা থাকি। তুমি আমাদের মাঝে প্রতিবছর ফিরে এস মা। তুমি না এলে জগৎ অন্ধকার । আমরা কি নিয়ে বাঁচবো মা? সারা বছর আমরাও যে দিন গুনি কবে তুমি আসবে!
জগা– তুমি যে কটা দিন মর্ত্যলোকে থাকো , সেইকটা দিন আমরা সব দুঃখ ভুলে আনন্দে মেতে উঠি !
হরি– আমাদের ক্ষমা করো মা ! আমাদের কিচ্ছু চাই না। তুমি দয়া করে আমাদের মাঝে প্রতি বছর এসো !
দুর্গা– তাই হবে। ওরে সুখ অথবা আনন্দ শুধু চাকরি বা BPL/ SC/ST/OBC কার্ডে থাকে না । সুখ সর্বদাই আছে, শুধু তাকে চিনে নিতে হয়। যতদিন বাঁচবি,ভালো কাজ কর। তাছাড়া মৃত্যুর পর মর্ত্যলোকের মায়া কাটিয়ে তোদের যমলোকে যেতে হবে। সেখানেই তোদের বিচার হবে। তোরা অনন্ত সুখ ভোগ করবি না নরকযন্ত্রণা ভোগ করবি তা তোদের কর্মফল অনুযায়ী ঠিক হবে। তাই ভাল কাজ কর। অন্যের জন্য বাঁচ, মানুষের দুঃখে সমব্যথী হতে শেখ, সর্বদা সত্য কথা বল , সৎপথে থাক, গুরুজনদের শ্রদ্ধা কর ও ঈশ্বরের সাধনা কর । আর কখনও হিংসা করবি না। তাহলে দেখবি তোদের কষ্ট হবে না । সৎপথে থাকলে তোদের মঙ্গল হবে । আর অমৃতলোকে তোদের জন্য অপেক্ষা করবে অনন্ত সুখ। আমি এখন কৈলাসে ফিরে যাই । পূজার সঠিক সময়েই আমি ফিরে আসব।
এই বলে নন্দী, ভৃঙ্গী সহ মা দুর্গা অন্তর্হিত হলেন, আর আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হতে লাগল মায়ের আগমন বার্তা। রেডিওতে বেজে উঠলো মহিষাসুরমর্দিনী ..
“আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর;
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা;
প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।
আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে আনে নব ভাবমাধুরীর সঞ্জীবন।
তাই আনন্দিতা শ্যামলীমাতৃকার চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন।
আজ চিৎ-শক্তিরূপিনী বিশ্বজননীর শারদ-স্মৃতিমণ্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা।’’