টালিগঞ্জ মেট্রোর এক নম্বর গেটের বাইরে শ্যামা প্রসাদ দে’র দোকান। প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেল, শ্যামার সকাল শুরু হয় টালিগঞ্জ মেট্রোর এক নম্বর গেটের বাইরে খবরের কাগজ এবং ম্যাগাজিন বিক্রি করে এবং বিকেলে সেই দোকানে সে কফিও বিক্রি করে। এই দোকানে সকাল থেকে সন্ধ্যে অবধি বসে বসেই সে ছবি আঁকা শুরু করে। ধীরে ধীরে সেই আঁকা যখন বিক্রি হতে থাকে তখন আঁকার প্রতি আরো উৎসাহ বারে তাঁর।
ছবি আঁকা ছাড়াও শ্যামা টি-শার্টে ফ্যাব্রিকের কাজ করে, নিজস্ব কার্টুনের বইও আছে তাঁর। তাছাড়া তিনি পলি-ফাইবারের ছোট ছোট গণেশও বানান। কিন্তু করোনার জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন হয়, এবং তাতে মেট্রো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মেট্রো বন্ধের কারণে শ্যামার দোকানও বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে শ্যামা বাঘাযতিন বাজারে এবং অটো স্ট্যান্ডে সকালে চা বিক্রি শুরু করে তারপর টালিগঞ্জে এসে দোকান খোলে।
অন্যদিকে করোনার কারণে এখন কেউ ফ্যাব্রিকের টি-শার্ট কিনতে চায়না। ছবিও এখন কেউ কিনতে চায়না। হস্ত-শিল্প মেলাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শ্যামা প্রসাদ রায় প্রথম পুরস্কার এবং একটি বিশেষ পুরস্কারও পেয়েছিল। একজন শিল্পীর অদম্য ইচ্ছার কাছে হার মেনেছে অভাব-অনটন। লকডাউনে পেটে টান পড়লেও তুলিতে টান পরেনি শ্যামা প্রসাদ রায়ের। সে এখনো টালিগঞ্জের দোকানে বসে বসে ছবি আঁকে, এবং দোকানদারি করে, খদ্দের কম, কিন্তু ছবি এখনো এঁকে চলেছেন শ্যামা প্রসাদ রায়। এক নতুন দিনের আশায়।