দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ বৃহস্পতিবার ৯৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ভারতের প্রখ্যাত মশলা ব্র্যান্ড এমডিএইচ (MDH)-এর মালিক মহাশয় ধর্মপাল গুলাটি। MDH এর মালিক ধর্মপাল জি এই ব্র্যান্ডের টেলিভিশন এবং মুদ্রণ বিজ্ঞাপন গুলিতে নিজের উপস্থিতির মাধ্যমে বিশেষ বৈশিষ্ট্যযুক্ত করেছিলেন। বিজ্ঞাপন জিঙ্গল এবং তাঁর ক্যামিও উপস্থিতি MDH কে ভারতের সবচেয়ে স্বীকৃত একটি ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে।
উল্লেখ্য, ধর্মপাল জি ১৯২৩ সালের ২৭ শে মার্চ পাকিস্তানের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন। এমনকি মাত্র ক্লাস ফাইভ অবধি পড়ার পর বিদ্যালয়ে যেতে পারেন নি। ১৯৩৭ সালে তিনি তাঁর পিতার সহায়তায় আয়না, সাবান এবং কার্পেন্ট্রির একটি ছোট ব্যবসা স্থাপন করেন। এর পরে সে ব্যবসা কাপড় এবং হার্ডওয়্যার বিক্রির সাথে আরো প্রসারিত হয়। তিনি একসময়ে চালের ব্যবসাও শুরু করেন। তবে সম্প্রসারণ সত্ত্বেও, তাঁর এই সমস্ত ব্যবসা স্থায়ী হয়নি এবং অবশেষে তিনি মহাশিয়ান ‘দি হাট্টি’ নামে মশলা তৈরির পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন, যা ‘দেগি মির্চ ওয়ালে’ নামেও পরিচিত ছিল।
ধর্মপাল দেশভাগের পর ভারতে আসেন এবং ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লি পৌঁছান, তার পকেটে তখন ছিল মাত্র ১৫০০ টাকা। এমডিএইচ (MDH) এর ওয়েবসাইটে তার প্রোফাইল অনুসারে, ধর্মপাল প্রথমদিকে একটি পণ্যগাড়ির চালক হিসেবে কাজ করতেন। ওই কাজ থেকে প্রাপ্ত সামান্য অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি একটি ছোট দোকান স্থাপন করেন এবং তার পারিবারিক ব্যবসার নামে নামকরণ করেন, এইভাবে শিয়ালকোটের এমডিএইচ-এর ব্যানার ভারতে উত্তোলন করেন।
যদিও শুধু ব্যবসা নয় ধর্মপাল তাঁর সমাজসেবামূলক কাজের জন্য পরিচিত বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ নতুন দিল্লির জনকপুরীতে একটি হাসপাতাল স্থাপন করেছেন। জানা গিয়েছে, ধর্মপাল জি ২০১৭ সালে এফএমসিজি (FMCG) খাতে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, তার কোম্পানি এমডিএইচ এর রাজস্ব ১৫% বেড়ে ৯২৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে এবং ২১৩ কোটি টাকায় নিট মুনাফা ২৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া গুলাটি’র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। “ধর্ম পালজী ছিলেন অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব। তিনি সমাজের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। ঈশ্বর তার আত্মার মঙ্গল করুন,” কেজরিওয়াল টুইট করেছেন।
“ভারতের সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক উদ্যোক্তা, এমডিএইচ-এর মালিক ধর্ম পাল মহাশায় আজ সকালে মারা গেছেন। আমি এমন উদ্দীপক এবং প্রাণবন্ত আত্মার সাথে কখনো দেখা করিনি। তার আত্মা শান্তিতে থাকুক,” বলেন সিসোদিয়া।
উল্লেখ্য তাঁর কোম্পানীর বিজ্ঞাপন এখনো ভারতীয় বিজ্ঞাপনের জগতে একটি ক্লাসিক বিজ্ঞাপন হিসেবে পরিচিত। আর তাঁর উপস্থিতি সেই বিজ্ঞাপনে একটি নতুন মাত্রা যা আজ ইতিহাস হিসেবে রয়ে গেল।