দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মে মাসে গলওয়ান প্রদেশে ভারতীয় সেনা হত্যা ও বলপূর্বক অনুপ্রবেশকে ধিক্কার জানিয়ে পরোক্ষ উপায়ে চীনের ওপরে আঘাত হেনেছে মোদী সরকার। ব্যান করে দেওয়া হয়েছে ‘টিকটকে’র মত জনপ্রিয় ভিডিও রেকর্ডিং এবং শেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন। যেহেতু চীনে অবস্থিত যে কোনো কোম্পানী কে সেই কোম্পানীর যাবতীয় তথ্য সরকারের সাথে ভাগ করে নিতে হয়, তাই টিকটকের ওপরে অভিযোগ ছিল যে তারা বিলিয়ন পরিমাণ ভারতীয় ইউজারের যাবতীয় তথ্য চীনে পাচার করছে। আর এই ইস্যুতেই জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ একে একে শতাধিক চাইনিজ অ্যাপের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আর এই নিষেধাজ্ঞার ফলে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে বাইটড্যান্স। এদের ই প্রোডাক্ট টিকটক।
বিশেষ সূত্রে খবর, চিনের বাইটড্যান্স ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার পর কোটিপতি মুকেশ আম্বানি -র রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের লিমিটেড -এর হাত ধরেই ফের ব্যবসায় ফিরতে চাইছে। এমনকি ভারতে বিনিয়োগের জন্য রিলায়েন্সের কর্ণধারের সঙ্গে একপ্রস্থ কথাও হয়েছে টিকটকের। জানা গিয়েছে, গত জুলাই থেকেই দুই সংস্থার কথা শুরু হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত আলোচনা চুক্তির জায়গায় পৌঁছোয়নি। তবে, এই বিষয়ে কতটা কথা এগিয়েছে, তা নিয়ে বিশদ কিছু খবর অফিশিয়ালভাবে জানা যায়নি।
জানা যাচ্ছে গত কয়েক মাস থেকে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে টিকটক। ইতিমধ্যে ব্যবসা বাঁচানোর জন্যে ও চীনা সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে লন্ডনে নিজেদের সদর দফতর খোলার বিষয়ে অনেকটা এগিয়ে। লন্ডন ছাড়াও নিজেদের সদর দফতরের জন্য আরও কয়েকটি শহরের নাম বিবেচনার মধ্যে রেখেছে বাইটড্যান্স। যদিও সেই তালিকাতে কোন কোন শহর আছে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
ভারতে এই অ্যাপকে ব্যান করায়, তাদের যে বিরাট পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাতে আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার টিকটক ব্যানের উদ্যোগ। আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই চিনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ করার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। এই কারণেই চীনের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাইটড্যান্স। জানা গিয়েছে প্রয়োজনে তাদের ব্যবসার কর্পোরেট কাঠামোর খোলনলচে বদলে ফেলতে চেয়েছে এই কোম্পানী।
কিন্তু এটা সত্যি যে বেজিংয়ের থেকে দূরত্ব তৈরির স্বার্থে পৃথক ম্যানেজমেন্ট বোর্ড তৈরির কথা ভাবছে বাইটড্যান্স। পাশাপাশি বহি:বিশ্বে পৃথক হেড অফিস তৈরি করাও হতে পারে। এই মূহুর্তে টিকটকের নিজেদের কোনও সদর দপ্তর নেই। অভিভাবক সংস্থা বাইটড্যান্সের সদর দফতর থেকে এই অ্যাপের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। গত শনিবারই টিকটক’কে আমেরিকায় ব্যান করার হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ব্যানের বিষয়টি তাঁর প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন। এদিকে এই সব ঝামেলা এড়ানোর জন্যে টিকটক বিক্রির তোড়জোড়ের খবর সামনে এসেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই অ্যাপের অপারেশন কিনে নেওয়ার বিষয়ে মাইক্রোসফট ও টুইটার দুই সংস্থাই সর্বাধিক আগ্রহী। যদিও মাইক্রোসফট বা টুইটার বা বাইটড্যান্সের তরফে এই বিষয়ে অফিসিয়ালভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি।