দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর জীবদ্দশায় আত্মজীবনী রচনায় হাত দিয়েছিলেন। চার খণ্ডে প্রকাশিতব্য সেই বইয়ের তিনটি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল ‘রুপা বুকস’ থেকে। আত্মজীবনীর নামকরণ করেছিলেন ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস্’। এই নামে তিন খণ্ডে বইটি প্রকাশিত’ও হয়ে গেছিল। কিন্তু চতুর্থ খণ্ড যেটির পাণ্ডুলিপি প্রণববাবু নিজে হাতে লিখেছিলেন সেটির প্রকাশ নিয়ে এবার গোল বাঁধল মুখার্জী পরিবারে।
জঙ্গিপুরের প্রাক্তন সাংসদ, কংগ্রেস নেতা অভিজিৎ মুখার্জী দুপুরবেলা টুইট করে জানান যে বইটির বাকি অংশের প্রকাশ যেন আপাতত স্থগিত রাখা হয়। এই মর্মে তিনি টুইটে রুপা বুকস্ ও তার কর্ণধার কপিশ মিশ্রকে ট্যাগ করেন। অভিজিৎ তার প্রথম টুইটে লেখেন যে বইটির বাকি অংশের কিছু প্রসঙ্গ নাকি কিছু মিডিয়া প্লাটফর্মে প্রচার হয়ে গেছে তাই এই প্রকাশনা আপাতত বন্ধ রাখা হোক। তারপর তিনি আরো দুটি রিটুইট করেন। সেখানে তিনি জানান যে, যেন তার অনুমতি নিয়েই এই বই প্রকাশ করা হয়। সঙ্গে এও জানান যে যদি তার বাবা প্রণববাবু জীবিত থাকতেন তিনিও একই মত পোষণ করতেন।


আরো পড়ুনঃ কলকাতায় নৌবাহিনীর জন্য একটি গাইডেড মিসাইল স্টিলথ ফ্রিগেট লঞ্চ করলেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত
অভিজিতের টুইটের পরেই আসরে নামেন তার বোন শর্মিষ্ঠা মুখার্জী। শর্মিষ্ঠা নিজেও দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কর্মী। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, তার দাদা যেন এই বই প্রকাশনার মাঝে কোনো বিরোধ না সৃষ্টি করেন। অভিজিতের ভঙ্গিতেই প্রথম টুইটে শর্মিষ্ঠা সাফ জানিয়ে দেন যে এই বই প্রকাশ করা আবশ্যক। তিনি রিটুইটে আরো জানান যে তার দাদা যেন বই প্রকাশকে কেন্দ্র করে কোনো সস্তা প্রচারে না নামে, সঙ্গে তিনি অভিজিতের টুইটে বইটির যে নাম বলা হয়েছে সেটিও সংশোধন করে দেন।


দাদা-বোনে বাগবিতন্ডা চললেও অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে বইয়ের চতুর্থ খণ্ডে প্রণববাবু তাঁর জীবদ্দশার শেষ দুই দশকের কথা লিখেছিলেন। যে সময়ে তিনি একাধারে ছিলেন কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা, অন্যতম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ও একইসঙ্গে অলংকৃত করেছিলেন রাষ্ট্রপতির পদ। কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ বিরোধ, মনমোহন সিংহের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব ও শেষবেলায় নরেন্দ্র মোদীর সরকার চলাকালীন তার রাষ্ট্রপতি পদ। অনেকেই দেখেছেন যে শেষদিকে এক সময়ের কংগ্রেসের পোড় খাওয়া এই নেতা আরএসএসের সমাবেশে অতিথি হিসেবে গেছিলেন। এইসব প্রসঙ্গ কি কোনো অপ্রিয় সত্য তুলে আনবে? যার ফলে বিপাকে পরতে পারে কংগ্রেস পার্টি। দাদা-বোনের তর্জার মাঝে সবথেকে বেশি উঁকি মেরে যাচ্ছে সেই দিকটিই।