দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:
সম্প্রতি একটি বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ঘটনাটি একটি ৫ বছরের শিশুকে কেন্দ্র করে।এক ৫০ বছরের ব্যক্তি এক ৫ বছরের শিশুকন্যাকে জোর করে ধরে তার সামনের প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন।
শিশুকন্যার মায়ের অভিযোগ, ‘ওই ৫০ বছরের ব্যক্তি, নাম লিবনুস কুজুর।তাঁর ৫ বছরের মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করে তাঁকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেন। এর মাঝে প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন।’অভিযুক্তোর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে সেশন কোর্টে পকসো আইনের আওতায় ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যাবে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে।
বিচারপতি গনেরিওয়ালা নিম্ন আদালতের সেই রায় খারিজ করে বলেন, ‘‘নাবালিকার মা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারি ঘটনার দিন অভিযুক্ত কুজুর নাবালিকার হাত ধরে রেখেছিল। সেই সময় অভিযুক্তের ট্রাউজার্সের জিপ খোলা ছিল। এই অভিযোগ যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞার সঙ্গে মেলে না।’’তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তি দেন, এই ঘটনায় ত্বকে স্পর্শ ও পেনিট্রেশন বা অঙ্গপ্রবেশের মতো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও তিনি জানান,‘‘কোনও মেয়ের হাত ধরে টানলে বা প্রকাশ্যে ট্রাউজার্সের জিপ খুললে তা যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে না।’’
এমন ঘটনায় সেশন কোর্ট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ড দিলেও বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এ(১) (শ্লীলতাহানি)এবং ৩৪২ নম্বর ধারা মোতাবেক ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন অভিযুক্তকে। বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করা যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়ে না। কারণ ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শ হয়নি। তাই এটিকে যৌন হয়রানির আওতায় ফেলা যায়।
গত ১৯ জানুয়ারি বিচারপতি গনেরিওয়ালা অন্য একটি মামলার রায়ে বলেছিলেন, ‘‘শিশুদের ক্ষেত্রে জামাকাপড় খুলে বা জামাকাপড়ের ভিতরে হাত গলিয়ে বুক বা গোপনাঙ্গ স্পর্শ না করা হলে তা পকসো আইনের আওতায় পড়বে না।’’
৩৯ বছরের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১২ বছরের এক কিশোরীর পোশাকের উপর দিয়ে বুকে হাত দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অঙ্গপ্রবেশ (পেনিট্রেশন) না ঘটিয়ে, পোশাক না খুলিয়ে বা পোশাকের ভিতরে হাত না গলিয়েও যদি যৌনতার উদ্দেশ্যে কোনও নাবালিকার গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা হয়, তবে কেবলমাত্র যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে।’’ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট গনেরিওয়ালার ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে।
লেখা সুপর্ণা পোদ্দার