দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:নির্বাচনের মুখে আজ ফের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন কয়েক ঘণ্টার রাজ্য সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুগলির সাহাগঞ্জ দলীয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি ভার্চুয়ালি নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো রেলের বর্ধিত অংশের উদ্বোধন করেন। সেইসঙ্গে রেলের আরও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
আরো পড়ুন:ভোটের মুখে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
এদিন হুগলির সভা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের একবার সিন্ডিকেট আর তোলাবাজির অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন স্লোগান ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’-কেও কৌশলে কটাক্ষ করলেন নমো। বাংলার ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌছে দেওয়ার জলজীবন মিশন নামের সরকারি প্রকল্পের প্রহঙ্গ টেনে এন প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন “জলজীবন মিশন চলছে সারা দেশে। যাতে দেশের প্রতি ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে যায় সহজে। জল আনতে দূর দূরান্তে যেতে না হয়। বাংলায় এই প্রকল্পেও বাধা দেওয়া হয়েছে। চালু হতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে গ্রামীণ বাংলায় দেড় কোটি থেকে পৌনে দু কোটি ঘর রয়েছে। তারমধ্যে মাত্র ৯ লাখ ঘরে জলের সুবিধা রয়েছে। বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে এখনও জল পৌঁছয়নি। বাংলার মেয়েদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। বাংলার মেয়েদের সঙ্গে যে অন্যায় করছে, তাকে কী মাফ করা যায়?”
এরপরেই তিনি অভিযোগ করে বলেন কেন্দ্র এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারকে ১৭০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য মোটে ৬০৯ কোটি টাকা খরচ করেছে। বাকি ১১০০ কোটি টাকা সরকার আত্মসাৎ করেছে ।
এরপরেই কাটমানি প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এ রাজ্যে যে কোনও প্রকল্প, শিল্প শুরু করতে গেলে কাটমানি দিতে হয়। কাটমানি কালচার থাকলে, আইনের শাসন না থাকলে রাজ্যের পরিস্থিতি বদলাবে না।” এর পরই রাজ্যবাসীকে আশ্বাস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি এমন সোনার বাংলা গড়বে, যেখানে কোনও কাটমানি দিতে হবে না। কাউকে তুষ্ট করতে হবে না।”
এরপরেই প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন তৃণমূলের শাসনকালে বাংলার উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায় এরজন্য দায়ী সিন্ডিকেটরাজ আর তোলাবাজি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় উন্নয়ন না পৌঁছালেও তৃণমূল নেতাদের ধনসম্পত্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিন নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো রেলের বর্ধিত যাত্রাপথের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী জানান “আজ একটা বড় দিন। দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর জন্য মানুষের অনেক সুবিধা হবে। যোগাযোগ গতি পাবে। হুগলি, হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মানুষের সুবিধা হবে। রেলের মাধ্যমে সংযোগস্থাপন। এরফলে উন্নয়নের নতুন দিশা খুলবে।এর ফলে লক্ষ মানুষের জীবন সহজ হবে। রাজ্যে রেল পরিকাঠামোর জোর দেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য আজ হুগলির সভার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বলেন “হুগলি নদী বাংলার জল ও জীবনধারা। এই দেবত্বভূমিতে এসে আমি বাবা তারকনাথকে শত শত প্রমাণ জানাই। “
প্রসঙ্গত আজ বঙ্গ সফরে আসার আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলায় টুইট করে লিখেছিলেন “হুগলী থেকে মেট্রো রেলের নোয়াপাড়া ও দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে সম্প্রসারিত অংশটির উদ্বোধন করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মা কালীর দুটি পবিত্র মন্দির কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে যোগাযোগ আরো উন্নত হবে, তাই এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই মন্দিরগুলি প্রাণবন্ত ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতীক।”