দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:গতকাল সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে আহত হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এরপর গ্রিন করিডোর করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পায়ের গোড়ালি এবং পায়ের পাতার হাড়ে চিড় ধরেছে। এছাড়া রক্তও জমাট বেঁধেছে।ওই পায়ের পেশীতেও চোট লেগেছে। এখনও পর্যন্ত পা ফোলা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।জানা গেছে তাঁর পায়ের ব্যাথা এতটাই প্রবল যে পা ওঠা নামা করতে পারছেন না তিনি।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের ফোলা ভাব কমলে বৃহস্পতিবারই প্লাস্টার করা হতে পারে।এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর ডান হাত, কাঁধ ও ঘাড়ে আঘাত রয়েছে।
উল্লেখ্য গতকাল এসএসকেএম হাসপাতালে একাধিক পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার পর, এমআরআই করানোর জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রাত ১টা নাগাদ তাঁকে এসএসকেএম- এর উডবার্ন ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই ৯ সদস্যের দল গঠিত হয়েছে। এসএসকেএম-এর অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ৩ বিভাগীয় প্রধান ও আরও ৫ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডে। এছাড়াও রয়েছেন অর্থোপেডিক, নিউরো সার্জারি, নিউরো মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি, কার্ডিওলজি, এন্ডোক্রিনোলজি, জেনারেল মেডিসিন এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন।তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখবেন বলে জানা গেছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থগিত হয়ে গেল তৃণমূলের ইশতেহারর প্রকাশের দিনক্ষণ। উল্লেখ্য নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী চোট পেয়েছিলেন সেই এলাকা পরিদর্শনে যান জেলা শাসক ও পুলিশ সুপার।এরপরেই ওই এলাকায় বিজেপি সমর্থকরা দাবি তোলেন তৃণমূলের পোঁতা খুঁটিতেই মমতা আঘাত পেয়েছেন। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। এরপরেই ক্রমশ চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ। দুপক্ষের ধস্তাধস্তিতে উত্তেজনা ছড়ায় নন্দীগ্রামে।
এসবের মধ্যেই গতকাল রাতে এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন চিত্তরঞ্জন নামের জনৈক ব্যক্তি । তিনি নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করে জানিয়েছেন , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ ধাক্কা দেয়নি। বরং লোহার খুঁটি-এ ধাক্কা লেগে দরজা বন্ধ হয়ে গেলে তৃণমূল সুপ্রিমো আঘাত পান।
হামলার তীব্র নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য প্রার্থনা করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন “মমতা দিদির ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করছি। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া উচিত। উনি দ্রুত সেরে উঠুন, এই প্রার্থনা রইল। প্রতিক্রিয়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।”
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লালু পুত্র তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলার নিন্দা করে বলেছেন “মমতাজির ওপর এই কাপুরুষোচিত এবং ঘৃণ্য দুষ্কৃতী হামলার দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা করছি। পশ্চিমবঙ্গে থানা পুলিশ সবই এখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণাধীন, যাকে পরিচালনা করছে বিজেপি। গোটা দেশ জানে ওই লোকগুলোকে , যাদের গণতন্ত্রে কোনও বিশ্বাস নেই। হার নিশ্চিত এমন যুদ্ধে হতাশা উগরে দিতে যতটা নিচে নামা যায় নামতে পারে তারা। “