দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আগ্রাসী চীন ও তার কথার খেলাপ এই দুই এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। সেই সাথে ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক সীমান্তে চীনের অতিসক্রিয়তা সীমান্তে শান্তি ফিরতে দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে রাজ্যে সফরে এলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি আসার আগেই টুইট করলেন, ‘দার্জিলিং যাচ্ছি।’ দু’দিনের সফর রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে। দু’দিনের সফরে দার্জিলিং ও সিকিম সংলগ্ন সীমান্ত ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। সীমান্তে জওয়ানদের সঙ্গে বৈঠক করে আসন্ন সমস্যার সমাধানে তাঁদের মনোবল বাড়াবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এমনটাই সূত্রের খবর।
রাজনাথ সিং আরও জানান যে, তিনি এই দুই রাজ্যের লাগোয়া চীন সীমান্তে যাবেন। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের (বিআরও) তৈরি এক রাস্তারও উদ্বোধন করবেন। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-ভুটান লাগোয়া চীন সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে সুকনা কর্পস। শনিবার সুকনা কর্পসের জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সেই সাথে সীমান্তে ভারতীয় সেনার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। তিনি বলেন যে এই সীমান্ত দেশের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন এখান দিয়ে সেনা প্রবেশ করাতে পারে। কারণ লাদাখে তাদের বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। এমনকি আসন্ন শীতে চীন আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে পারে বলে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সূত্রে খবর রয়েছে ভারতীয় সেনবাহিনীর কাছে।
এই বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এবার দশেরা পালন করবেন রাজনাথ সিং সিকিমে ভারত-চীন সীমান্ত এলাকায়। আজ রবিবার দার্জিলিং এর সুকনা ওয়্যার মেমোরিয়ালে শস্ত্র পুজোও করেন তিনি। প্রতি বছর দশেরাতে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন রাজনাথ। এমনকি ২০১৯ সালে ফ্রান্সে থাকাকালীন শস্ত্র পুজোয় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। লাদাখে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যাচ্ছেন রাজনাথ। তাই এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে আরও যা খবর, সীমান্তজুড়ে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে বেজিং। এমনকি চীনের সেনার অবস্থানের বদলও ঘটাতে চাইছে চীন। তিব্বতে অধিকৃত ভারতের আকসাই চীন সীমান্তে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে বেজিং। আকসাই চীনের পাশাপাশি, ঝিংজিয়াং সীমান্তেও মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা।
সেন সূত্রে খবর লাদাখের ১,৫৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে যে এই শীতে সরছে না চীন সেটা ভারতীয় সেনাবাহিনী জানতে পেরেছে। তা আরও নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যখন আকসাই চীনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে চীন। সূত্রের খবর, প্রায় ৩ লাখ বর্গফুট এলাকাজুড়ে চলছে নির্মাণ। যার অর্থ প্রায় চারটি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা। গোগরা হটস্প্রিং এলাকার সমান্তরালে নির্মাণ চালাচ্ছে চীন। এই পরিস্থিতিতে রাজনাথ সিং এর পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম সফর নিশ্চিতভাবেই গুরুত্বপূর্ণ।