দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: তামিলনাড়ুর সান্থানকুলাম থানা এলাকায় গত জুনে লকডাউনের সময় নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত ১৫ মিনিট নিজেদের মোবাইলের দোকান খোলা রেখেছিল বাবা-ছেলে। সেজন্য দু’জনকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়েরাতভর বেধড়ক মারে পুলিশ সেই সাথে চলেছে বিকৃত যৌন অত্যাচার। ওই ঘটনার দুদিন পর সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় দু’জনের। দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল এই নির্মম পাশবিকতা নিয়ে।
উল্লেখ্য, দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় সামাল দিতে ঘটনার তদন্তে নামে CBI। দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস তদন্তের পর ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করল সিবিআই। CBI তাদের চার্জশিটে জানাল, ১৯ জুন সন্ধে ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত জয়রাজ (৫৯) আর ছেলে বেনিকস (৩১)কে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে পুলিশ। উদ্দেশ্য ছিল, ‘উচিত শিক্ষা দেওয়া’। এতটাই মেরেছিল, যে সাথানকুলাম থানার দেওয়ালে রক্ত ছিটে এসে লেগেছিল। বেনিকসকে অন্তর্বাস খুলিয়ে সেই রক্তের দাগ মুছতে বাধ্য করেছিল পুলিশ। ফরেনসিক তদন্তে সে তথ্য জানা গেছে।
১৯ জুন প্রথমে জয়রাজকেই তুলে নিয়ে গেছিল পুলিশ। বাবার খোঁজে থানায় পৌঁছন বেনিকস। তখন তাঁকেও আটক করে নেয় পুলিশ। তার পরই শুরু হয় মারধর। সিবিআই চার্জশিটে জানিয়েছে, বাবা-ছেলে দুজনেই কোনো লকডাউন নীতিই ভঙ্গ করেননি। তাঁদের অকারণে হেনস্থা করেছিল পুলিশ। নিজেদের দোষ ঢাকতে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে এফআইআর-ও দায়ের করেছিল পুলিশ।
সিবিআই তাদের চার্জশিটে আরও জানিয়েছে যে, জয়রাজ বারবার জানিয়েছিলেন তাঁর উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস রয়েছে। তাও ন্যূনতম রেয়াত করেনি পুলিশ। বাবা-ছেলেকে জামা খুলিয়ে শুধু অন্তর্বাস পরিয়ে হাত-পা বেঁধে মেরেছিল। পিঠে, কোমড়ে, নিতম্বে, হাতে, পায়ে মারা হয়েছে। ময়নাতদন্তে ধরা পড়েছে। এই মারে সহকর্মীদের প্ররোচনা দিয়েছে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী শ্রীধর।
এমনকি পরের দিন কোর্টে পেশ করার সময় রক্তে ভিজে গিয়েছিল জয়রাজ ও বেলিকসের জামা। এজলাসেই দু’- দু’বার সেই জামা খোলানো হয়েছে। পরে সেগুলো হাসপাতালের আবর্জনা পাত্রে ফেলে দিয়েছিল পুলিশ। ২২ জুন কয়েক ঘণ্টার অন্তরায়ে মৃত্যু হয় বাবা-ছেলের।