দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:কয়েক শতাব্দীর প্রাচীন ঐতিহ্যের অবসান হতে চলেছে শ্রী জগন্নাথ ধাম পুরীতে। এবার রুপোর পাত দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহ-সহ সমস্ত কাঠের দরজা। এই বিশাল ‘রৌপ্য’ কাজে ব্যবহার করা হবে ২,৫০০ কেজি রুপো। আর এই মহান কর্মযজ্ঞের সৌজন্যে মুম্বইয়ের এক ভক্ত।
এই রুপোর কাজের বিষয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দরজায় রুপোর নকশা চূড়ান্ত করতে ১৭ সদস্যের এক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৭’শে অক্টোবর অর্থাত্ আজ সেই কাজের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করতে কমিটি বৈঠকে বসেছে।
এই প্রসঙ্গে পুরী জগন্নাথ মন্দিরের প্রশাসক (উন্নয়ন) অজয় জেনা জানিয়েছেন, ‘কালাহাট দ্বার, জয়বিজয় দ্বার, বেহেরানা দ্বার, পশ্চিম ভোগমণ্ডপ দ্বার, নরসিংহ মন্দির দ্বার, বিমলা মন্দির দ্বার এবং মহালক্ষ্মী মন্দিরের দ্বার মিলিয়ে মোট ৮ টি দ্বার ২,৫০০ কেজি রুপোর পাত দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে, যা মুম্বইবাসী এক ভক্ত দান করেছেন।’ তাঁদের মতে প্রাচীন দরজাগুলি ক্ষয়ে গিয়েছিল। সেগুলির স্থলাভিষিক্ত হবে বার্মা টিক কাঠের দরজা দিয়ে, যা মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হবে। এমনকি নতুন দরজার কাঠও ওই ভক্তই সরবরাহ করবেন।


মন্দির সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, কাঠের দরজার খোদাইকাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ১৫.৩২ কোটি টাকা মূল্যের ওই রুপোর পাতগুলি মন্দিরের স্ট্রং রুমে সুরক্ষিত থাকবে। প্রাথমিক দফায় জয় বিজয় দ্বার, কালাহাট দ্বার ও বেহেরানা দ্বার রুপোর পাত দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে। বাকি গুলি ধীরে ধীরে করা হবে।
পুরনো দরজাগুলি ক্ষয়ে গিয়ে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছিল যে, প্রতিদিন সেগুলিতে তালা লাগাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তেন মন্দিরের সেবাইতরা। প্রসঙ্গত, পুরী মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের দরজার নাম জয় বিজয় দ্বার। দর্শন সেরে মন্দির থেকে প্রস্থানের জন্য ভক্তরা বেহেরানা দ্বার ব্যবহার করেন।
অন্য দিকে, আগামী ২৭ নভেম্বর তিন বিগ্রহের নাগার্জুন বেশ ধারণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে অতিমারী আবহে জগন্নাথ মন্দির ভক্তদের জন্য খোলা যায় কি না, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি মন্দির কর্তৃপক্ষ। এর আগে ১৯৯৪ সালে শেষবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়।
প্রসঙ্গত, কোভিড সংক্রমণের জেরে গত মার্চ মাস থেকে মন্দিরে ভক্ত সমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে। রথযাত্রার জেরে ৪০০ সেবাইত করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরে এই মূহুর্তে মন্দির নতুন করে খোলার সম্ভাবনা আরও কম।