দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আজ বৈঠক করলেন মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী জগদীপ ধনকড়। বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমে নিজের মন্তব্য জানাতে গিয়ে তিনি রাজ্যের তৃণমূল পরিচালিত সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা থেকে রাজনৈতিক হিংসা সমস্ত বিষয়েই তীব্র আক্রমণ করলেন।
উল্লেখ্য দুদিনের দিল্লি সফরে বুধবার তিনি দিল্লি পৌঁছে ছিলেন। যাওয়ার আগে টুইট করে জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মাননীয় অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর পরেই আজ তিনি নতুন দিল্লিতে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জন সাধারণের সাথে যুক্ত বেশ কিছু বিষয়, এছাড়াও রাজ্যের আরও বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশদে আলোচনা হয়েছে।
এর পরই তিনি রাজ্য প্রশাসনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আমলারা সরাসরি রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে কাজ করছেন। রাজ্যে গোটা আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণ হয়ে গিয়েছে। তিনি আজ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন ”যে কোনও রাজ্যে আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণ গনতন্ত্র টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
আজ তিনি প্রশান্ত কিশোরের নাম না করে মন্তব্য করেন, ”রাজ্যে ক্ষমতার অলিন্দ দখল করে নিয়েছে এমন কিছু মানুষ যাঁদের সঙ্গে সরাসরি রাজ্য রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’ প্রাইভেট কোম্পানীর মদতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিচালিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক হিংসার প্রসঙ্গ তুলে তিনি ইঙ্গিত করেন, গোটা রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে। রাজ্যে মানবাধিকারের কোনও জায়গা নেই এই অভিযোগ তুলে তিনি ১৬ দিন ধরে হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা এক রাজনৈতিক কর্মীর দেহের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। তাঁর অভিযোগ, ”হাইকোর্টের রায় থাকার পরও কেন ওই ব্যক্তির দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে না।’
রাজ্যপালের দাবি, রাজ্যের উদ্ভূত যে কোনও সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর সাথে কোনও আলোচনা করতেই রাজি নয়। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি লিখে তিনি একটি বিষয় জানতে চাইলে দু’লাইনের উত্তর দিয়ে দায় সেরেছেন ডিজি। আর তাঁকে বাঁচাতে সরাসরি আসরে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ ধনকড়ের। তিনি বলেন, ”রাজ্য সরকারের এই আচরণে আমি বিস্মিত এবং লজ্জিত।’
সূত্রের খবর, শাহকে এ সমস্ত বিষয় বিস্তারিত জানিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসনের আমলাদের উপস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচন কতটা সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন শাহের কাছে। তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে।