দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত বছর আগস্টে প্রকাশিত অসমের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় কিছু অযোগ্য ব্যক্তির নাম কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হল সেই প্রশ্নের জবাব চেয়েছে গুয়াহাটি হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এই বিষয়ে যথাযথ উত্তর চেয়ে অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) কোঅর্ডিনেটরকে একটি বিস্তৃত হলফনামা দাখিল করতে বলেছে। আদালত উল্লেখ করেছে যে বর্তমান মামলাটি ‘অত্যন্ত গুরুত্বের’ এবং এটি ‘নিছক উদাহরণ’ নয়। একইসঙ্গে আদালত জোরপূর্বক জানিয়েছে যে এনআরসি তালিকায় অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম উঠে আসা ‘আইন বিরুদ্ধ’।
এই মর্মে গত সপ্তাহে জারি করা এক আদেশে বিচারপতি মনোজিত ভুঁইয়া ও বিচারপতি সৌমিত্র সাইকিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ এনআরসি’র কোঅর্ডিনেটর হিতেশ দেব শর্মাকে এই মামলার পরবর্তী শুনানির আগে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, নলবাড়ি জেলার মুকালমুয়ার বাসিন্দা রহিমা বেগমের একটি আবেদনের ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি চলছে আদালতে। এনআরসি (NRC) তালিকায় তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে বিদেশি ট্রাইব্যুনালের ২০১৯ সালের আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ওই আদেশ থাকা সত্ত্বেও রহিমা বেগমের নাম রয়েছে এনআরসি তালিকায়। যা অবৈধ বিদেশিদের উৎখাত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।
গত বছর ৩১ শে আগস্ট অসমের এনআরসি তালিকায় প্রকাশিত ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রায় ৩ কোটি ৩০ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছিল। নতুন এই তালিকা ১৯৫১ সালে প্রকাশিত একই প্রকারের তালিকার একটি সাম্প্রতিকতম সংযোজিত রূপ, যা সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ মেনে এবং উচ্চ আদালতের নজরদারিতে তৈরি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালত জানিয়েছে, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আদালতের নির্দেশ, অসমে এনআরসি’র রাজ্য কোঅর্ডিনেটর একটি বিস্তৃত হলফনামা দাখিল করুক। বর্তমান পরিস্থিতির রেকর্ড দাখিল করার পাশাপাশি এনআরসি তালিকায় অবৈধভাবে যাঁদের নাম গিয়েছে সেই তথ্য জানাতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আবেদনকারী রহিমা বেগমের বাসস্থান নলবাড়ি শুধু নয়, রাজ্যের প্রতিটি জেলার তথ্য থাকতে হবে ওই হলফনামায়।
যদিও এই মাসের শুরুতে অসমের সমস্ত জেলা প্রশাসক ও নাগরিক নিবন্ধনের (ডিআরসিআর) জেলা রেজিস্ট্রারকে এনআরসি তালিকা থেকে অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম মুছে দিতে অর্ডার জারি করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য এনআরসি কোঅর্ডিনেটর হিতেশ দেব শর্মা। যদিও এমন কতজন অযোগ্য ব্যক্তি এনআরসি তালিকায় রয়েছে সে ব্যাপারে ওই চিঠি–তে কোনও কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০ হাজার অসমবাসীর নাম বাদ পড়তে থাকে চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে।