দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বাঁশ দিয়ে দীপাবলীর প্রদীপ তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। আজ স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর তৈরি ওই প্রদীপ বাজারজাতকরণের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। শিল্পীদের ওই অভিনব ওই আবিষ্কার দেখে তিনি আপ্লুত। ওই সৃষ্টির জন্য স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর প্র্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, “আজ সত্যিকার অর্থেই প্রধানমন্ত্রীর ‘ভোকাল ফর লোকাল’ স্লোগান সফলতা অর্জন করেছে।” একথা বলে তিনি এও চাইছেন যে, আলোর উত্সব দীপাবলিতে পরিবেশ বান্ধব এই প্রদীপ আলোকিত করুক সমগ্র ত্রিপুরাকে।
উল্লেখ্য, সিপাহি জেলার নলছড় এলাকায় স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী বাঁশ দিয়ে প্রদীপ তৈরি করেছে। মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ওই স্ব-সহায়ক দল বিভিন্ন আকৃতির প্রদীপ তৈরি করে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন। ওই প্রদীপের কারু-কার্য এতটাই আকর্ষণীয় যে ক্রেতাদের নজর টানতে অসুবিধা হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। ওই স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর জনৈক সদস্যা জানিয়েছেন, বাঁশের উপর বিভিন্ন ধরনের নকশা তৈরি করা হয়েছে। তার ভেতরে মোম দিয়ে সলতে রাখা হয়েছে। ওই মোম গলে গেলেও পুনরায় ব্যবহারযোগ্য থাকবে প্রদীপটি। তিনি বলেন, ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত দর নির্ধারিত করা হয়েছে একেকটি মোমবাতির দাম। যেমন আকার সেই অনুপাতেই দাম নির্ধারিত হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, চাহিদা অনুযায়ী উত্পাদনে আমরা সক্ষম।


আজ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের হাত দিয়ে বাঁশের প্রদীপ বাজারজাতকরণের সূচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশবান্ধব প্রদীপ তৈরি করেছেন। সারা রাজ্যে ওই প্রদীপ ব্যবহৃত হবে। ওই প্রদীপ তৈরিতে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীগুলিকে উত্সাহ দেওয়া এবং অর্থনৈতিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে ত্রিপুরা সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাঁশ জাত দ্রব্য উত্পাদনের প্রতি আরও বেশি নজর দিতে বলেছেন। তাই বাঁশকে বনজ সম্পদের তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন বাঁশ বিক্রির জন্য বন দফতরের অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ‘ত্রিপুরার ব্যাম্বু মিশনে’র নজরদারি রাখছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কর্মসংস্থান এবং পরিবেশ বান্ধব হিসেবে বাঁশ একটি ব্যতিক্রমী উপাদান। কারণ, খুব অল্প সময়ে বাঁশ পরিপূর্ণ আকার ধারণ করে। সেই বাঁশ কেটে ব্যবহারের পর পুনরায় বাঁশ উত্পন্ন হয়ে যায়। তাতে বাঁশ দিয়ে শিল্প স্থাপন যথেষ্ট লাভজনক বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁর আরও দাবি, ত্রিপুরায় বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার গঠন হওয়ার পর স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীগুলি দারুণভাবে উন্নতি করতে শুরু করেছে। কারণ, লাভজনক প্রমাণিত না হলে বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে প্রত্যেকেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাতে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। তাঁর কথায়, বাঁশের মোমবাতি বিকল্প পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে। তেমনি, স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর উন্নতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে কর্মসংস্থান বাড়বে।
এদিকে, আজ মুখ্যমন্ত্রীকে আঁখের তৈরি গুড় উপহার দিযেছে একটি স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী। এছাড়া ত্রিপুরায় তৈরি জ্যাম মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হয়েছে। তিনি ওই পণ্যগুলি বাজারজাতকরণে বাঁশের প্যাকেট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, বাঁশ দিয়ে জলের বোতল, বিস্কুট, চাল তৈরি হয়েছে। এখন মোমবাতিও তৈরি হয়ে গেছে। আগামীদিনে বাঁশ দিয়ে আরও অভিনব পণ্যের আবিষ্কার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। তাতে তিনি নিশ্চিত, রাজ্য জুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে।