দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: হাইকোর্ট এ খারিজ হওয়া অর্ণব গোস্বামীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে একাধিক প্রশ্নের মুখে মহারাষ্ট্র সরকারের প্রশাসন। রিপাললিক টিভির এডিটর-ইন-চিফের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রুজু হয়েছে কোন যুক্তিতে, তা নিয়েই মূলত প্রশ্ন তোলে সুপ্রীম কোর্ট।
উল্লেখ্য, ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অন্বয় মালিক এবং তাঁর কুমুদ মালিকের আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় অর্ণবের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট এবং জামিনের জন্য নিম্ন আদালতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন অর্ণব এর উকিল।
বুধবার, অর্থাত আজ সেই পিটিশনের শুনানিতে অর্ণবের আইনজীবী হরিশ সালভে দাবি করেন, পুর্নতদন্তের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে মুম্বাই পুলিশ ও মহারাষ্ট্র সরকার। নিজের দাবি স্বপক্ষে সওয়ালও করেন তিনি। পরে মহারাষ্ট্র সরকারের হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বলের সওয়ালের মাঝপথেই বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘৩০৬ ধারার অন্তর্গত প্ররোচনার জন্য তাতে (আত্মহত্যার ক্ষেত্রে) প্রকৃত প্ররোচনার থাকতে হয়। কেউ অন্যজনের থেকে টাকা পাবেন এবং তাঁরা আত্মহত্যা করলেন, তাহলে সেটা কি (আত্মহত্যায়) প্ররোচনা হবে?’’
এই বিষয়ে বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ আরও বলে, ‘‘আমরা ধরে নিচ্ছি যে এফআইআরে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ধ্রুব সত্য। তারপরও এটায় কি ৩০৬ ধারার মামলা করা যায়? এরকম বিষয়ে যেখানে কিছুটা অর্থ মেটানো হয়নি। তার ফলে আত্মহত্যা করেছেন। তার মানে কি প্ররোচনা দেওয়া? সেজন্য যদি কাউকে জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে সেটা কি বিচারের নামে প্রহসন নয়?’’
এরপর ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন,‘‘উপযুক্ত এবং ন্যায্য তদন্তের অধিকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। কিন্তু উত্তরটা সোজা। আপনারা যদি কোনও টিভি চ্যানেল পছন্দ না করেন, তাহলে দেখবেন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আজ যদি এই মামলায় হস্তক্ষেপ না করি, তাহলে আমরা ধ্বংসের পথে হাঁটব। যদি এটা আমার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি চ্যানেলটি দেখব না। মতাদর্শের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সাংবিধানিক আদালতে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। নাহলে আমরা ধ্বংসের পথে হাঁটছি।’’
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর অর্ণব সহ অপর দুই অভিযুক্তের গ্রেফতার করে আলিবাগ পুলিশ। গ্রেফতার হন ফিরোজ শেখ এবং নীতিশ সারদাও। সেদিনই অর্ণবকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয় আলিবাগের একটি আদালত। সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন অর্ণব। কিন্তু সেখানে সোমবারও স্বস্তি মেলেনি। ৪৭ বছর বয়সী এই সংবাদকর্মীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়নি বম্বে হাইকোর্ট। তাই অর্ণব গোস্বামী এবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে জামিনের আবেদন জানালেন।