দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা তথা মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েসি। আজ হায়দ্রাবাদে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন আগামী ২০২১ সালে তাঁর দল বাংলায় প্রতিদ্বন্দিতা করবে। আর এই ঘোষণাই এখন কপালে ভাঁজ ফেলছে বঙ্গ রাজনীতিকদের। কারণ আড়ালে আবডালে গেরুয়া শিবিরের সাথে তাঁর নাকি দারুন ‘দোস্তি’। সেই আশঙ্কা ও অনুমান দুটিই কার্যত মান্যতা পেয়ে গিয়েছে বিহারের নির্বাচনে। সেখানে তাঁর দল কার্যত এনডিএ বিরোধী ভোট কেটে রাজ্যে পরিবর্তনের পথ আটকে দিয়েছে। আর এই শঙ্কাই তৈরি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির ময়দানেও।
গতকালই কার্যত সাপ-লুডো পরিস্থিতিতে বিহারের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত। সেখানেই প্রকাশ্য ১১টি আসনে হার-জিত হয়েছে হাজারের কম ভোটে। এমনকি মাত্র ১২ ভোটে জয়ের নজিরও রয়েছে। এই রকম অবস্থায় দেখা যাচ্ছে অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন বা এআইএমআইএম যা মানুষ মিম বলেই বেশি চেনে সেই আসাদউদ্দিন ওয়েসির দল ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৫টি আসনে জয় পেয়েছে আর রাজ্যের ৪ কোটি ভোটারের ১.২৪ শতাংশ ভোটও পেয়েছে। শুধু তাই নয় অন্তত ১২টি আসনে বিজেপি বিরোধী ভোটে থাবা বসিয়ে বিজেপির জয়ের পথ মসৃণ করে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে যদি ওই ভোট মিম না পেত তাহলে ভোটের ফলাফল অন্যরকমই হত। স্বাভাবিক ভাবেই ৫টি আসনে জয়লাভের পরে মিম প্রধান যে হাত গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকবেন এটা একদমই হতে পারে না। সেই মতো এদিন ওয়েসি জানিয়েও দিলেন আগামী বছর বাংলায় অন্তত ৪৫টি আসনে তাঁর দল প্রার্থী দেবে। তবে ওয়েসির এই ঘোষণায় পশ্চিমবঙ্গে বড় কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন না রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
এর কারণ ওয়েসি বা মিমের ভোটব্যাঙ্ক হল উর্দু ভাষী সংখ্যালঘু মানুষজন। পশ্চিমবঙ্গে সেই সংখ্যাটা মাত্র ৬ শতাংশ। কলকাতার খিদিরপুর এলাকার ৩-৪টি বিধানসভা কেন্দ্র, মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমার ৩-৪টি কেন্দ্র ও উত্তর দিনাজপুর জেলার ৩-৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে সেই উর্দুভাষী ভোটারদের বসবাস যার একটা বড় অংশই আবার টিপিক্যাল কংগ্রেসের ভোটার। তাই মিম যদি এ রাজ্যে প্রার্থী দেয় তাহলে মূলত কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। শাসকদল তৃণমূল সেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। তাই বিজেপিরও সেভাবে লাভ কিছু হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
অন্যদিকে আর একদল মনে করছে মিম যদি ধর্মীয় ভাবাবেগ কে প্রধান্য দিয়ে বাঙালি প্রার্থীকেই দাঁড় করান সেক্ষেত্রে ৪৫ টি আসনেই বিপুল সংখ্যক ভোট কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। আর সেখানেই পশ্চিমবঙ্গে যুযুধান দুই পক্ষ গেরুয়া ও সবুজ শিবিরের মধ্যে ভোটের লড়াইটা অনেকটা বিহারের মত অবস্থাতে গিয়ে দাঁড়াবে। তবে গেরুয়া শিবিরের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ স্থির না হওয়া অবধী দাড়িপাল্লার হিসেবে সবুজ এখনো অনেকটাই এগিয়ে বলেই মনে করছে রাজ্যের রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা।