দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বাস্তবে এমন ঘটনা বিরল, যেখানে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা মানসিক ভারসাম্যহীনহিন হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করছেন। আর তাকেই এক সন্ধ্যেতে সহায়তা করতে গিয়ে চিনতে পড়লেন তাঁরই দুই পুলিশ স্কুলের সহপাঠী! হ্যাঁ, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে এমনটাই ঘটেছে। সাক্ষী খোদ মধ্যপ্রদেশ পুলিশের এক ডিএসপি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উপনির্বাচনের ভোটগণনার পর ঝাঁসি রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন ডিএসপি রত্নেশ সিং তোমার এবং বিজয় সিং ভদোরিয়া। এমন সময়ে ফুটপাথে মধ্যবয়সি এক ভিখারীকে ঠান্ডায় কাঁপতে দেখেন তাঁরা। ওই ভিক্ষুকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই অবাক বনে যান ওই দুই অফিসার। কারণ ওই ভিখারী আসলে ওই দুই ডিএসপি-র নিজেদের ব্যাচেরই নিখোঁজ এক পুলিশ কর্তা! নিখুঁত নিশানার জন্য একসময় যিনি পুলিশ মহলে সুনাম কুড়িয়েছিলেন।
সত্য সামনে আসতেই জানা গিয়েছে ওই ভবঘুরের নাম মণীশ মিশ্র। ১৯৯৯ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৫ সাল পর্যন্ত পুলিশে চাকরি করেন তিনি। তিনি পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন ১০ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যান। নিখোঁজ হওয়ার আগে দাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ছিলেন মনীশ মিশ্র। থানাতে থাকা কালীনই ধীরে ধীরে তাঁর মানসিক সমস্যার শিকার হয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাঁর চিকিত্সাও শুরু করেন। কিন্তু তিনি হঠাত্ই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে মণীশের খোঁজ পাওয়া যায়নি।


দুই ডিএসপি জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সালে তাঁদের সঙ্গে সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন মণীশ। তাঁর যে এমন পরিণতি হতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না ওই দুই অফিসার। দুই অফিসার মিলে মণীশের সঙ্গে কথা বলে তাঁর স্মৃতি ফেরানোর চেষ্টা করেন। তাঁকে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু মণীশ তাতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত দুই ডিএসপি মিলে একটি সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারাই এসে মণীশকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে তাঁর দেখাশোনা ও চিকিত্সা শুরু করেছে।