দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: লাদাখে যাওয়ার কথা থাকলেও পরিকল্পনা বদলে এবছর দীপাবলি রাজস্থানেই কাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সকালেই জয়সলমিরে সেনা বাহিনীর জওয়ানদের কাছে পৌঁছে যান তিনি। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। আজ জওয়ানদের সামনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাঁর ভাষণে জানিয়ে দেন, সীমান্ত সুরক্ষায় কোনওরকম আপস নয়। ভারতের হাতে সৈন্য ক্ষমতার সঙ্গে আছে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিও।
এবার দেখে নেওয়া যাক এক নজরে প্রধানমন্ত্রী আজ যা যা বলেছেন:
আমি আমার দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আমি আজ আপনাদের মাঝে প্রত্যেক ভারতীয়র শুভেচ্ছা নিয়ে এসেছি।
আপনি তুষার আবৃত পাহাড়ে বা মরুভূমিতে থাকতে পারেন, আমার দীপাবলি পালন কেবল তখনই যখন আমি আপনাদের মাঝে আসি। আপনাদের মুখের আনন্দের দিকে তাকালে আমার সুখ দ্বিগুণ হয়।
হিমালয়ের শিখর, মরুভূমি, ঘন অরণ্য বা সমুদ্রের গভীরতা – আপনাদের বীরত্ব সবসময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করে।
দেশের উপকণ্ঠে কোনও একটি পোস্টের নাম যদি দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে রাখে, বহু প্রজন্ম মনে রাখ, তবে সেই পোস্টের নাম লঙ্গেওয়ালা পোস্ট। এই পোস্টে আপনাদের সহকর্মীরা এমন বীরত্বের একটি কাহিনী লিখেছেন যা এখনও প্রতিটি ভারতীয় হৃদয়ে পূর্ণ করে।
যখনই সৈন্যদের উত্কর্ষতার ইতিহাস লেখা হবে এবং পড়া হবে, লঙ্গেওয়ালার যুদ্ধের কথা মনে পড়বে। ১৩০ কোটি ভারতীয় আপনাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি ভারতীয় আমাদের সৈন্যদের শক্তি এবং বীরত্ব নিয়ে গর্বিত। তাঁরা আপনাদের অদম্যতা নিয়ে গর্বিত। বিশ্বের কোনও শক্তিই আমাদের সাহসী সৈন্যদের দেশের সীমান্ত রক্ষা করতে বাধা দিতে পারে না।
ভারত তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে এবং তার প্রতিরক্ষা খাতকে আত্মনির্ভর করতে দ্রুত কাজ করছে। আমরা দেশীয় অস্ত্র কারখানায় মনোনিবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতিরক্ষা খাতের এই সিদ্ধান্তের ফলে ১৩০ কোটি ভারতীয়কে স্থানীয় জিনিস ব্যবহারের পক্ষে সোচ্চার হয়ে কাজ করতে আবেদন করা হয়েছে।
আজ সমগ্র বিশ্ব বিশটারবাদী ও বিচ্ছিনতা শক্তি দ্বারা অস্থির। সম্প্রসারণবাদ এক দিক থেকে একটি মানসিক ব্যাধি এবং ১৮ শতকের চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত করে। ভারতও এই চিন্তার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠছে।
আজ ভারত সন্ত্রাসীদের এবং তাদের নেতাদের ঘরে ঘরে ঢুকে হত্যা করে। বিশ্ব এখন বুঝতে পারে যে ভারত কোনও মূল্যে, কোনও স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না। ভারতের এই খ্যাতি ও মর্যাদা সবই আপনাদের শক্তি ও বীরত্বের কারণে। ভারত আজ আন্তর্জাতিক ফোরামে স্পষ্টতই তার মতামত উপস্থাপন করছে কারণ আপনারা দেশকে সুরক্ষিত করেছেন। যতক্ষণ আপনারা এখানে আছেন, এই দেশের দীপাবলি উদযাপন পুরোদমে এবং আলোকিত হয়ে থাকবে।
আজ ভারতের কৌশল একেবারে পরিষ্কার। আজকের ভারত নিজে বোঝা এবং অন্যকে বোঝানোর নীতিতে বিশ্বাসী। তবে যদি আমাদের পরীক্ষা করার চেষ্টা করা হয় তবে তীব্র জবাব পাবে।
আমি সশস্ত্র বাহিনীর কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করতে চাই। প্রথমত উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া; দ্বিতীয়টি হল যোগ অনুশীলন করা; তৃতীয়টি হল মাতৃভাষা ও ইংরেজি ব্যতীত অন্য একটি ভাষা শেখা। এটি নতুন দৃষ্টিকোণ এবং উত্সাহ জাগাতে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী প্রতিবারই তাঁর দীপাবলি সেনাদের সাথেই পালন করেন। এবছর চীনের সাথে সীমান্ত সমস্যা রয়ে গিয়েছে। গতকাল অর্থাত্ শুক্রবার কাশ্মীরে পাকিস্তানের অতর্কিত আক্রমণ ও সেখানে ৮ জন জওয়ানের মৃত্যু এবারের দীপাবলীর উত্সবের আলো ম্লান করলেও আজ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও পাশে থাকা সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীদের মনে যে জোর বাড়াবে বলাই বাহুল্য।