বিশ্বজোড়া অনুরাগীদের কাঁদিয়ে, ৪০ দিনের লড়াই শেষে চিড়বড়ায় জানিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর শেষ নিশ্বাসের সাথে সাথেই সমাপ্তি ঘটলো ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অধ্যায়ের। রবিবার বেলা ১২ টা বেজে ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বর্ষীয়াণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ফেলুদার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সারা দেশ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীও। গান গেয়ে, মিছিল করে, গান স্যালুটে প্রিয় নায়ককে বিদায় জানিয়েছেন তিলোত্তমা।
আর এবার অপরাজিত ‘অপু’র চলে যাওয়ায় ইতিহাসে এই প্রথমবার তাদের বহু বছর ধরে চলে আসা নিয়ম ভাঙল আমূল। এই প্রথমবার কোনও শিল্পীর উদ্দেশ্যে তাদের বিখ্যাত আমূল ডোডোল বা আমূল গার্ল এর বাংলা পোস্টার তৈরি করল এই সংস্থা। আমূলের ট্যুইট করা ওই সাদা-কালো শোকজ্ঞাপক ওই পোস্টারে লেখা- ‘বাংলা মিত্রহীন’। আসলে অভিনেতা যখন নশ্বর থেকে অবিনশ্বরে গেলেন, তখন স্মৃতিমেদুর আমূলও। বাংলা তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক রত্নকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ!
সত্যজিৎ রায়েই অপুর সংসার (১৯৫৯) এই ছবি দিয়েই রূপোলি পর্দায় আত্মপ্রকাশ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। তারপর সত্যজিৎ-সৌমিত্র জুটি উপহার দিয়েছেন ১৪টি অসামান্য ছবি। পরিচালকের চারুলতা (১৯৬৪) ছবিতে ‘অমলের’ ভূমিকায় সাড়া ফেলেছিলেন সৌমিত্র। সৌমিত্রর কেরিয়ারের মাইলস্টোন কেবমাত্র সত্যজিৎ রায়ের ছবিই নয়। লিস্টে রয়েছে মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদারের ছবিও।
ঝিন্দের বন্দী (১৯৬১) ছবিতে উত্তম কুমারের বিপরীতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ময়ূরবাহন-এর ভূমিকায় দর্শক এখনও মনে করে তাঁকে। তার পরেই বছরই অভিযান (১৯৬২)।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ছবির তালিকা এভাবে বলে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। লকডাউনের পরে শেষ অভিনয় করেছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় তাঁর বায়োপিক অভিযান-এ। অবশেষে সব কিছু ক্ষান্ত করে শান্ত হলেন তিনি চির নিদ্রাতে।