দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সিবিআই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া কোনও তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির কাছে যেমন স্বস্তির, সেরকমই তা বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এটি নেতিবাচক বলেই অনুমিত। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে বরাবরই সোচ্চার বিরোধীরা। এই পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের এই রায় যথেষ্টই তাত্পর্য্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলায় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ‘আইন অনুযায়ী, রাজ্যের সম্মতি ছাড়া সিবিআইকে কোনও মামলায় যুক্ত করতে পারে না কেন্দ্র। এ বিষয়ে রাজ্যের সম্মতি বাধ্যতামূলক। সংবিধানে উল্লিখিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই আইন তৈরি করা হয়েছে।’ আজ শীর্ষ আদালত এও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তের পরিধিও বাড়াতে পারবে না কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রসঙ্গত:, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগড়, কেরল, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব এবং মিজোরাম- সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে গেলে তাদের অনুমতি বাধ্যতামূলক করেছে বিরোধী শাসিত এই আটটি রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি বি আর গভাই দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট এর কথা উল্লেখ করে এই রায় দিয়েছেন। এই আইনের দ্বারাই সিবিআইকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্টের একটি মামলার রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে এই নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রসঙ্গত ওই মামলাতে একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে কয়লা বিক্রির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ওই মামলায় রাজ্য সরকারের দুই অফিসারেরও নাম জড়ায়। ওই সংস্থায় আচমকা হানা দিয়ে সিবিআই জানতে পারে, কোল ইন্ডিয়ার থেকে চুক্তির ভিত্তিতে পাওয়া কয়লা কালো বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
সিবিআইয়ের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে ওই অভিযুক্ত অফিসার আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁদের দাবি ছিল, সিবিআই তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার যে সাধারণ সম্মতি দিয়ে রেখেছে, তা যথেষ্ট নয়। এই ধরনের তদন্ত করার জন্য রাজ্যের থেকে সিবিআইয়ের আলাদা করে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। এর আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলার রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার সিবিআইকে যে সাধারণ সম্মতি দিয়ে রেখেছিল, সেটাই যথেষ্ট। পরে ওই দুই অফিসারের নাম চার্জশিটেও রাখা হয়। যদিও, এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দুই সরকারি অফিসার।