দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আগেই ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে সেনা জানিয়েছিল নাগরোটায় মৃত জঙ্গিদের পাকিস্তান-যোগ রয়েছে। এবার সামনে এল জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের গুপ্ত পথের হদিশ। এই বিষয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের এক শীর্ষকর্তার মতে সাম্বা সেক্টরের একটি আন্তঃসীমান্ত সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। আজ রবিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ বিএসএফ সেটি খুঁজে পেয়েছে। আর সুরঙ্গের পাশ থেকেই পাওয়া গিয়েছে করাচির কোম্পানীর বালির বস্তা।
আজ এই সুড়ঙ্গ ও বালির বস্তা প্রসঙ্গে বিএসএফের ইনস্পেক্টর জেনারেল এনএস জামওয়াল জানান, ‘‘রবিবার সাম্বা সেক্টরের রিগ্যাল পোস্টের কাছে একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া গিয়েছে। যা ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ১৬০ মিটার ভিতর পর্যন্ত এসেছে।’’ তিনি নিশ্চিত করেন যে, সেই সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করেছিল নাগরোটার জইশ জঙ্গিরা।
বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান রেঞ্জার্সের চকভুরা থেকে সেই সুড়ঙ্গটি শুরু হয়েছে। ছোটো ছোটো কাঠের পাটাতন দিয়ে সেটিকে মজবুত করা হয়েছিল। সেটির গভীরতা প্রায় ২০ ফুট এবং তিন ফুট চওড়া। সুড়ঙ্গের মুখ প্রায় ১.৫ ফুট চওড়া। যেখান দিয়ে অনায়াসে ৩২ ইঞ্চির কোমর পার করে যেতে পারে। সুড়ঙ্গের মুখ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বালির বস্তা। তাতে লেখা ছিল ‘অ্যাঙ্গরো ফার্টিলাইজার, করাচি, পাকিস্তান’।
বিএসএফের ইনস্পেক্টর জেনারেল বলেন, ‘আমরা দড়ি এবং ১০-১৫ টি বালির বস্তা উদ্ধার করেছি। যেগুলি (সুড়ঙ্গের মুখে) ব্যবহার করা হয়েছিল।’ তিনি জানান, বান টোলপ্লাজার নিহত জঙ্গিদের যে পাকিস্তানের যোগ ছিল, তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ ও ছবিগুলি-সহ রেঞ্জার্সের কাছে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার কাক ভোরে নাগরোটার বান টোলপ্লাজার কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে খতম হয় চার জঙ্গি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, গোলাবারুদ, গ্রেনেড এবং বিস্ফোরক (আরডিএক্স) থেকে স্পষ্ট যে উপত্যকায় বড়সড় হামলা চালানোর ছক ছিল। জঙ্গিদের থেকে ১১ টি একে-সিরিজের রাইফেল, ৩০ টি চিনা গ্রেনেড, ১৬ টি একে ধরনের গোলাবারুদ এবং ২০ কিলোগ্রাম আরডিএক্স উদ্ধার করা হয়।
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীর হাতে স্পষ্ট প্রমাণ আছে যে, সীমান্তের ওপার থেকে যে মদত জোগানো হয়েছিল। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া একটি জিপিএস এবং চারটি মোবাইল থেকে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে জইশের অপারেশনাল কমান্ডার মুফতি রউফ আসঘার এবং কারি জারারের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিল। যে আসঘার হচ্ছে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ছোটো ভাই এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্ধারিত জঙ্গি।