দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:চিকিত্সকদের যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ প্রমাণ করে মারণ করোনাভাইরাস কেড়ে নিল আরও একজন চর্চিত রাজনৈতিক নেতার প্রাণ। বুধবার ভোররাতে হরিয়ানার গুরুগ্রামের মেদান্তা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন করোনা-আক্রান্ত কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ প্যাটেল। ৭১ বছর বয়সী এই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১৫ নভেম্বর গুরুগ্রামের মেদান্তা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনা সংক্রমণে তাঁর শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে ‘মাল্টিঅর্গান ফেলিওর’ হয়। আহমেদ প্যাটেলের মৃত্যুর দুঃসংবাদ বুধবার ভোরে সর্বপ্রথম জানিয়েছেন তাঁর ছেলে ফৈজল প্যাটেল।ফৈজল একটি টুইট করে জানান, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ২৫ নভেম্বর ভোররাত ৩.৩০ মিনিট নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন আমার বাবা। প্রায় এক মাসে আগে করোনা-আক্রান্ত হওয়ার পর, শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল।’ পাশাপাশি করোনা-স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য বাবার শেষকৃত্যে জমায়েত না করার অনুরোধ করেছেন ফৈজল।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ প্যাটেলের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশের রাজনৈতিক মহল। শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রা, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আহমেদ প্যাটেল বর্তমানে গুজরাট থেকে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন যিনি মৃদুভাষী হিসেবেই সকলের কাছে পরিচিত ছিলেন। তিনি আট-বারের সাংসদ, রাজ্যসভা থেকে পাঁচবার এবং লোকসভা থেকে তিনবার। বর্তমানে তিনি কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।
আহমেদ প্যাটেল ১৯৪৯ সালের ২১ আগস্ট গুজরাটে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন গুজরাটের ভারুচ জেলায় স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মধ্যে দিয়ে। লোকসভার সাংসদ হন ১৯৭৭ সালের মার্চ মাসে এরপর তিনি এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম লোকসভার সাংসদ ছিলেন। ১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসে সর্বপ্রথম রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। আহমেদ প্যাটেল ১৯৮৫-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং প্রধানমন্ত্রীর সংসদীয় সচিবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। প্যাটেল কখনওই মন্ত্রী হননি, সর্বদা নেপথ্যে থেকে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করে গিয়েছেন। সোনিয়া গান্ধী জানিয়েছেন তিনি একজন বিশ্বস্ত বন্ধু হারিয়ে ফেললেন।