দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বিহারের স্পীকার নির্বাচনের আগে এখনো চলছে দল ভাঙনের খেলা। এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু যাদবের বিরুদ্ধে। এই মূহুর্তে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন আর সেখানে বসেই মোবাইল কলের মধ্যমে এই মূহুর্তে শাসক দল এনডিএ-র বিধায়কদের প্ররোচিত করছেন। অভিযোগ লালু দল বদল করতে ও মন্ত্রীটূ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিচ্ছেন। আর এ অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। সুশীল বাবু টুইটারে একটি মোবাইল নম্বর দিয়েছেন, যেটি কারাবন্দী লালু প্রসাদ ব্যবহার করছেন বলে তাঁর দাবি।
লালু প্রসাদ যাদব রাঁচি থেকে টেলিফোন কল করছেন এনডিএ বিধায়কদের আর তাদের মন্ত্রিত্বের টোপ দেওয়া হচ্ছে। সুশীল কুমার মোদী টুইট করেছেন। সুশীলবাবু বলেন তিনি ৭০এর দশক থেকেই লালুকে চেনেন, দুজনেই তখন ছাত্র নেতা হিসেবে জেপি-র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এই ঘটনা সামনে আসতেই তিনি লালু প্রসাদ কে ওই নাম্বারে কল করেন। তিনি জানান – “যখন আমি টেলিফোন করেছিলাম, লালু নিজেই ধরেছিলেন। আমি বললাম জেল থেকে নোংরা কায়দা করবেন না। আপনি সফল হবেন না।”
উল্লেখ্য সম্প্রতি একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, যাতে আরজেডি প্রধান (লালু) এক বিজেপি বিধায়ককে মন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলছেন বিহার বিধানসভায় স্পীকার নির্বাচনে গরহাজির থাকতে। বিজেপির অভিযোগ, এই কলটি করা হয়েছিল বিজেপি বিধায়ক লাল্লন যাদবকে। অডিও ক্লিপটিতে লালু যাদবের মতো একটি কণ্ঠস্বরকে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। যে বলছে “আমরা তোমায় মন্ত্রী করে দেব, স্পীকার নির্বাচনে আমাদের সমর্থন করতে হবে।”
অন্যদিকে ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে বিজেপি বিধায়ক যখন বলেন, “আমরা একটা দলে রয়েছি। তখন লালু যাদবের মতো কণ্ঠস্বর বলেন, “অনুপস্থিত হয়ে যাও। করোনা হয়ে গেছে।”
এমন কী আরজেডি নেতাকে এও বলতে শোনা যায় যে, তুমি যদি আমাদের সমর্থন করো, আমরা আমাদের স্পীকার পাব। তখন তোমার জন্য ঠিকঠাক ব্যবস্থা করা যাবে। প্রসঙ্গত: ইতিমধ্যে পশুখাদ্য দুর্নীতি মামলায় লালু ৪ বছরের জন্য জেল খাটছেন ঝাড়খণ্ডে। যদিও তিনি তার সাজার বেশিরভাগ সময়টাই স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হাসপাতালে কাটিয়েছেন। সম্প্রতি রাঁচির রিমস হাসপাতালের অধিকর্তাকে দেওয়া বাংলোয় নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
উলেখ্য, এই মাসের শুরুতে বিহারে বিধানসভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে মোদী-নিতীশের এনডিএ। উল্টোদিকে একক বৃহত্তম দল হিসেবে লালুর ছেলে তেজস্বী যাদব দারুন ফল করলেও তেজস্বীর নেতৃত্বে মহাজোট বিহারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই তারা এখন বৃহত্তম বিরোধী দল। সামনেই স্পীকার নির্বাচন আর সেই নির্বাচনকে এবার লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছে আরজেডি।
অন্যদিকে নীতিশ কুমারের ১৫ বছরের রাজত্বে বেশিরভাগ সময়টাই উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুশীল কুমার মোদী। যদিও এবার তাঁকে সেই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিজেপির হয়ে বিহার বিধান পরিষদের এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আবার বিহার রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক জন্মনিলো। দেখা যাক এ জল কোথায় গড়ায়।