দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শুক্রবার সকালে দিল্লি সীমান্তে পৌঁছল কৃষকদের মিছিল। সমস্ত বাধাবিপত্তি সত্বেও ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে বদ্ধপরিকর কৃষকরা। যদিও, কৃষকদের দিল্লি ঢুকতে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়। কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের এই অভিযান রুখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে পুলিশ। কিন্তু, কৃষকরাও হার মানতে নারাজ। শুক্রবার (দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্ত) সিংঘু সীমান্তে কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে পুলিশ।
কৃষকদের এই অভিযানকে ঘিরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে দিল্লি-পানিপত হাইওয়ে। অন্যান্য রাজ্য থেকে দিল্লিগামী যাত্রীরা এজন্য ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন। নাজেহাল অবস্থায় একজন যাত্রী জানিয়েছেন, “আমি জম্মু থেকে আসছি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই দিল্লি পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এখনও আটকে আছি। কখন পৌঁছতে পারব জানি না।” দিল্লি-গুরুগ্রাম সীমান্তেও ব্যাপক যানজট হয়। যানজট হয় যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতেও। দাঁড়িয়ে থাকে অসংখ্য যানবাহন।
দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে, সিংঘু সীমান্তে কৃষকদের আটকে দেওয়া হয়। এরপরই কৃষকরা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি আমরা। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের মাধ্যমেই দিল্লিতে যাব আমরা। গণতন্ত্রে আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। দিল্লি-বাহাদুরগড় হাইওয়ের কাছে টিকরি সীমান্তে কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ফলে কৃষকরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে পরেন। কৃষকদের রুখতে রাস্তার মধ্যে ট্রাক রেখে ব্যারিকেড করে পুলিশ, ট্র্যাক্টরের সাহায্যে সেই ট্রাক রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন কৃষকরা। সবমিলিয়ে যেনতেন প্রকারেণ দিল্লি গিয়েই ছাড়বেন কৃষকরা এমনটাই কৃষকদের আত্মপ্রত্যয়।


দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কৃষকদের বিক্ষোভ থেকে বাধা দেওয়া নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন। আম আদমি পার্টির (এএপি) জাতীয় সভাপতি এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন যে কেন্দ্রের মোদী সরকারের তিনটি কৃষি বিল কৃষকবিরোধী। এই বিল প্রত্যাহারের পরিবর্তে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তাদের উপর জল কামান চালানো হচ্ছে। কৃষকদের উপর এই নৃশংসতা সম্পূর্ণ ভুল। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হল কৃষকদের সাংবিধানিক অধিকার।
দুই দিন ধরে দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত নৈতিক জয়লাভ কৃষকদের। দীর্ঘ সংঘাতের পর কৃষকদের দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। জানানো হয় যে পুলিশের তদারকিতেই বিক্ষোভ প্রদর্শনের স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে ষকদের। উল্লেখ্য, সিএএ বিক্ষোভের পর ফের দিল্লিতে এই মাত্রায় বিক্ষোভ প্রদর্শনে চাপে রয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে এবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার আগামী ৩ ডিসেম্বর কৃষকদেরকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানান।