দ্য ক্যালকাটা মিরর: দিল্লি- হরিয়ানা সীমান্তে আরও বেশি সংখ্যক কৃষক জড়ো হয়েছেন। গতকাল গভীর রাতে অমিত শাহের শর্তসাপেক্ষে আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন বিক্ষোভকারী চিকিত্সকরা। তাঁরা দিল্লি অবরুদ্ধ করার ডাক দিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দিল্লী-হরিয়ানা সীমান্তে অচলবস্থা জারি। ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। রবিবার গভীর রাতে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে তাঁর বাড়িতে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার।


বৈঠক শেষে কৃষকদের অমিত শাহ প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কৃষকরা যদি শুধুমাত্র দিল্লি বুরারিতে সরকারের চিহ্নিত করে দেওয়া জায়গাতেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান, তাহলে আগামী ৩ ডিসেম্বর তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা হুমকি দিয়েছেন, সোনিপথ, রোহতক, জয়পুর, গাজিয়াবাদ-হাপুর এবং মথুরা- দিল্লির এই পাঁচটি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেবেন তাঁরা, সেই সাথে দিল্লির গান্ধী ময়দানেই তাঁরা সভা করতে চান।


ইতিমধ্যে আজ সকাল থেকেই কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে দিল্লিতে প্রবেশের টিকরি, সিংঘু সীমান্তে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। গাজিপুর সীমান্তও আংশিক সিল করা হয়েছে। গত তিন দিন ধরে দিল্লি সীমান্তের কাছে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক। মূলত পঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে জড়ো হয়েছেন এই কৃষকরা। শুধু তাই নয়, গোটা দেশেই এই রকম স্তব্ধ করে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কৃষক নেতারা।
প্রসঙ্গত: রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে আন্দোলনরত কৃষকরা দাবি করেন, কোন রকম শর্ত ছাড়াই সরকারের তাঁদের আলোচনায় ডাকা উচিত ছিল। এই আন্দোলনে সামিল হওয়া কৃষকরা নতুন পাশ হওয়া তিনটি কৃষি আইন বাতিল এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। কৃষকদের আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট করে দেওয়া মাঠে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে সেটিকেই অস্থায়ী জেল হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে।


এমনতিতেই গত বৃস্পতিবার থেকেই কৃষকদের দিল্লী প্রবেশ আটকাতে জল কামান , টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। যদিও তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে হরিয়ানা পুলিশ ব্যর্থ হয়। তবে কৃষকদের এই বিক্ষোভের পিছনে খলিস্তানি মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার। তাতে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ান মনোহর লাল খাট্টার। হরিয়ানার পুলিশও কৃষকদের আন্দোলন থামাতে যে ধরনের আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে, তারও সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।


অন্যদিকে আন্দোলনের তীব্রতা যত বাড়ছে, চাপও বাড়ছে কেন্দ্রের উপরে। বাধ্য হয়ে আসরে নামেন অমিত শাহ। কিন্তু তাঁরও প্রস্তাবও খারিজ করে দিলেন অনড় কৃষকরা। কৃষকদের ক্ষোভ প্রশমনে অমিত শাহ এমনও বলেছেন, কৃষকদের বিক্ষোভের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উস্কানি নেই। তবে তিনটি নতুন আইনই কৃষকদের মঙ্গলেই প্রণয়ন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই কৃষি আইনের ভালো দিক গুলি নিয়ে কৃষকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন। যদিও তিনি এই আন্দোলনের প্রসঙ্গ আনেন নি।