দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অষ্টম দিনে পড়ল কৃষকদের ‘অন্নদাতা আন্দোলন’। “চাষিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ভারত সরকার, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক বিক্ষোভকে ঘৃণা এবং উদাসীনতার সঙ্গে সামলানো হচ্ছে।” এই মন্তব্য করে শিরোমণি আকালি দলের নেতা এবং পঞ্জাবের পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল নিজের পদ্মবিভূষণ সম্মান ফিরিয়ে দিলেন।
এই বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে তাঁর চিঠি ইমেল করে জানিয়েছেন, তিনি বর্তমান পরিস্থিতে কোন কোন কারণে ‘আঘাত’ পেয়েছেন এবং কোথায় কোথায় ‘বিশ্বাসঘাতকতা’-এর অনুভূতি হয়েছে তাঁর। তিনি চিঠিতে এও লেখেন যে,”সাধারণ কৃষক-সহ সাধারণ মানুষের জন্য আজ আমি এটা হতে পেরেছি। আজ যখন তিনি (কৃষক) নিজের সম্মানের থেকেও বেশি কিছু হারিয়েছেন, তখন পদ্মবিভূষণ সম্মান রেখে দেওয়ার কোনও যুক্তি দেখছি না আমি।”


পাঞ্জাবের পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী বর্ষীয়ান বাদল জি’র আক্ষেপ, মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে কৃষকদের লড়াই করতে হচ্ছে। শুধু প্রকাশ সিং বাদল নন তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই পদ্মবিভূষণ ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন শিরোমণি আকালি দলের (গণতান্ত্রিক) প্রধান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সুখদেব সিং ও।


অন্যদিকে নিউ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে তিনজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৩৫ টি কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে চতুর্থ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন। ওই বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে হাজির আছেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, বাণিজ্য এবং রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং বাণিজ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সোমপ্রকাশ। সোমপ্রকাশ অন্যদিকে পাঞ্জাবের সাংসদও।
এই প্রসঙ্গে একটি গোপন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, “এই কৃষি বিলের সংস্কারের ফলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের উপর কোনও প্রভাব না পড়বে না। তবুও সরকার নতুন কিছু প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস দিতে পারে যাতে সংস্কারের ফলে প্রশ্ন চিহ্ন ওঠা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে নির্ধারিত থাকে, বা কোন বিরূপ প্রভাব না পড়ে।’


আরও পড়ুন: ‘অন্নদাতা’ কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এনডিএ ছাড়ার হুমকি দিলেন রাজস্থানের রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক দল
এর পাশাপাশি নতুন দিল্লিতে দূষণ রুখতে সরকারের পক্ষ থেকে যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল, তা ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও তুলেছেন কৃষকরা। সেই বিশেষ অধ্যাদেশ অনুযায়ী, দিল্লিতে দূষণের জন্য দায়ী হলে শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা। সেই অধ্যাদেশের আওতায় পড়ছেন কৃষকরাও । মূলত: যাঁরা শুকনো খড় বা গম বা ধান কাটার পর নাড়া পুড়িয়ে থাকেন। সূত্রের খবর , ‘সেই নাড়া পোড়ানোর বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তির জন্য বেশি ভর্তুকির বিকল্পও রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে।’ কৃষকরা যাতে সেই পথ অনুসরণ করেন সে বিষয়েও কথা হওয়ার কথা। এদিকে আজ এই আন্দোলন অষ্টম দিনে পরার ফলে দিল্লি প্রবেশের চারটি রুট অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।