দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সতের তম দিনে পড়ল দিল্লি-সিংঘু সীমান্তে চলা কৃষি বিক্ষোভ। আর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী এবং এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার শুক্রবার কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য বিরোধী দলগুলোর পরামর্শ না নিয়ে সংসদের মাধ্যমে নতুন কৃষি আইন দ্রুত বলবত্ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি এও বলেছেন যে কৃষকদের যেন আর ধৈর্য’র পরীক্ষা না দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে মুম্বাইয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে পাওয়ার আরও সতর্ক করে দেন যে সরকার যদি শীঘ্রই কোন সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে দিল্লির সীমান্ত থেকে দেশের অন্যান্য অংশে কৃষক দের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাওয়ার বলেন – “যখন এই বিলগুলো সংসদে পেশ করা হয়, তখনই সরকারকে জানানো হয়। যদিও সেই মুহূর্তে তাদের পক্ষে কোন আলোচনা ছাড়াই এই গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলো পাশ করা সম্ভব ছিল, ফলে পরবর্তী পর্যায়ে কৃষকদের প্রতিক্রিয়া দেওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সরকার এই বিষয়ে মনোযোগ দেয়নি এবং ১৫-২০ মিনিটের একটি নামমাত্র আলোচনার মাধ্যমে এই বিলগুলো পাস করেছে।”
শরদ জি যার দল মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন জোটের অংশ তিনি বলেন, “আজ কৃষকরা চরম অবস্থান নিয়েছে যে যদি রাষ্ট্র এই বর্তমান আন্দোলন থেকে সমাধান চায়, তাহলে প্রথমে এই বিল প্রত্যাহার করতে হবে। কেন্দ্র অবশ্য এই দাবি মেনে নিতে পারছে না এবং এই সংগ্রাম আরো কয়েকদিনের জন্য দীর্ঘায়িত হতে পারে… কৃষক আমাদের দেশের খাদ্য সরবরাহকারী। কেন্দ্রের কাছে আমার অনুরোধ, তাদের ধৈর্য আর পরীক্ষা করা উচিত নয়।”
এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক আরো বলেন যে কেন্দ্রের অবস্থানের কারণে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে এবং এমনকি আরও বৃহত্তরভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন “আমি খবর পেয়েছি যে ৭০০ ট্রাক্টর ভর্তি কৃষক আজ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়, তাহলে এই বিক্ষোভ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।”
আরও পড়ুন:জে পি নাড্ডা’র পর এবার বঙ্গ সফরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যেতে পারেন জেলাগুলিতেও
কৃষক আন্দোলনে চীন ও পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাওসাহেব দানভের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন: “কিছু লোকেরা বুঝতে পারে না কোথায় এবং কিভাবে কি বলা উচিত। এই ধরনের মন্তব্যের প্রতি আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত নয়।
উল্লেখ্য, সরকার এবং কৃষকদের মধ্যে শেষ পাঁচ দফা আলোচনা অসমাপ্ত রয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং ফার্ম ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠকের পর ৯ ডিসেম্বর শেষ দফার আলোচনা বাতিল করা হয়। কিন্তু কৃষক ইউনিউনের নেতারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন যে যদি আইন পুরোপুরি বাতিল না করা হয় তাহলে তারা তাদের প্রতিবাদ বাড়াবে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র কৃষকদের আন্দোলন বন্ধ এবং নতুন দফায় আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই মূহুর্তে আরও ১৫০০ কৃষক পাঞ্জাব থেকে এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্যে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।