দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সাত জেলার প্রায় ১,০০০ গ্রাম থেকে প্রায় ১৩০০ ট্রাক্টর-ট্রলি সহ ১৫০০ যানবাহন নিয়ে কৃষকরা এগোচ্ছে দিল্লি সিংঘু সীমান্তে। কৃষক মজদুর সঙ্ঘর্শ কমিটির (কেএমএসসি) মতে, পাঞ্জাব থেকে বিক্ষোভকারীদের একটি নতুন কনভয় সপ্তাহান্তে আজ সন্ধ্যেতে অথবা কাল দিল্লি সীমান্তে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেএমএসসি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে যে একাধিক দলে বিভক্ত এই কনভয় দুই সপ্তাহ আগে কুন্ডলি বরাবর সীমান্তে পৌঁছানো বিক্ষোভকারীদের প্রথম দলের স্থলাভিষিক্ত হবে। কেএমএসসি’র প্রেসিডেন্ট সাতনাম সিং পান্নু বলেন “ইতিমধ্যে দিল্লির সীমান্তে একটি বিশাল সমাবেশ হয়েছে, কিন্তু আমরা একটি উপায় খুঁজে বের করব। যদি আমরা জায়গা না পাই, আমরা যেখানে পারি সেখানেই থামবো। তাছাড়া, আমাদের ইতিমধ্যে কুন্ডলিতে একটি মঞ্চ আছে।”
গুরুদাসপুরের পিদি গ্রামের বাসিন্দা পান্নু বলেন “কনভয়ে অমৃতসর, গুরুদাসপুর, তরণ তরণ, জলন্ধর, হোশিয়ারপুর, ফিরোজপুর এবং মোগা থেকে বিক্ষোভকারীরা রয়েছে। একে অপরের সাথে সমন্বয় করে তারা বিকেল ৫টার দিকে ১ নং জাতীয় সড়কে লুধিয়ানার দোরাহাতে জড়ো হয়। তারা ছোট দলে এগিয়ে যাবে যাতে মহাসড়কের ভিড় না হয়।”
আরও পড়ুন: এবার ‘রেল রোকো’ আন্দোলনে নামতে চলেছেন সিংঘু’তে বিক্ষোভরত কৃষকরা
কেএমএসসি নেতারা অনুমান করেছেন যে কনভয়টি ট্রাক্টর-ট্রলিতে প্রায় ৩০,০০০ বিক্ষোভকারী বহন করছে, যার মধ্যে আরো ১,০০০ গাড়িতে রয়েছে। জেলা কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা দিল্লির দিকে যাওয়া বিক্ষোভকারী এবং যানবাহনের সংখ্যা গণনা করছেন না।
ফিরোজপুরের তালওয়ান্দি নেপালন গ্রামের বাসিন্দা কেএমএসসির প্রেস সচিব বলজিন্দর সিং সান্ধু বলেন- বলেছেন, নতুন কনভয় দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রা করবে। সেজন্যে “আমরা রেশন, কুইল্ট, কাপড়, এলপিজি সিলিন্ডার, বালতি ইত্যাদি নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ট্রলিগুলো জলরোধী চাদর দিয়ে ঢেকে আছে এবং আমরা দিল্লিতে প্রত্যাশিত প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত।”
পান্নু বলেন, শনিবার বিকেলের মধ্যে প্রথম ব্যাচ দিল্লি সীমান্তে পৌঁছানোর আগেই কনভয় টি হরিয়ানার শাহবাদ মারকান্ডায় থামবে। “এই যাত্রা এখন অপ্রতিরোধ্য। জুন-জুলাই মাসে কেন্দ্রের আমাদের কথা শোনা উচিত ছিল। আব দিল্লি দুর নহীং (এখন দিল্লি খুব বেশি দূরে নয়), বলেন পান্নু। বিক্ষোভকারীরা এই আন্দোলনকে “বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে তাদের জমি থেকে দূরে রাখার লড়াই” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ফিরোজপুরের কাছাড় ভানা গ্রামের ৩১ বছর বয়সী আমানদীপ সিং বলেন “আমি একজন ক্ষুদ্র কৃষক যার ৩ একর জমি আছে। আমার বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন, আর আমার দুই ভাই তাদের জমির উপর চাষ করে। খামার আইন আমাদের জন্য একটি মৃত্যু পরোয়ানা। যদি বেসরকারি কোম্পানির কন্ট্রাক্ট ফার্মিং শেষ পর্যন্ত আমাকে তাদের জমিতে কর্মচারী তে পরিণত করে? এজন্যই আমি দিল্লিতে আমার প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছি।”
ফিরোজপুরের লালচিয়ান গ্রামের ধরম সিং সিধু বলেন “যদি এই ক্ষেত্রগুলো আমার না থাকে? আমাকে নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য লড়াই করতে হবে। ক্ষেত আমাদের মা। কৃষক তার জমির প্রতি অনেক স্নেহ আছে। এই আইন ভালো নয়। “
ন্যূনতম পুলিশ মোতায়েন থাকায় রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা কৃষকদের চলাচল আটকাতে পারবে না। লুধিয়ানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন – “আমরা ট্রাক্টরের গতিবিধির উপর নজর রাখছি না। ভারতের সংবিধান দেশের যে কোন স্থানে মানুষের অবাধ চলাচলের অনুমতি দেয়।” একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন-“ট্রাক্টর চলাচল এখন রুটিন। অনেক মানুষ যায় এবং অনেকে ফিরে আসে।”