এই সপ্তাহে ব্রিটেনের ল্যানসেটে নব্য আবিষ্কৃত টিকার হিউম্যান ট্রায়ালে সাফল্যের আভাস পেতেই অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মের মহাপরিচালক তার দাম ধার্য করেছেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ গবেষণাতে তৈরি করা এই ভ্যাকসিনটি এই বছরের শেষেই মানুষের হাতে পৌঁছে যাবেন বলে মনে করছেন এই ফার্মের মহাপরিচালক পাস্কাল সরিওট।
তিনি একটি রেডিও চ্যানেল কে উদ্ধৃত করে বলেন যে “আমাদের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অলাভজনক ভিত্তিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। তাই আমরা ঠিক করেছি ব্যয়মূল্যে বা কস্ট প্রাইসে এই ভ্যাকসিন সরবরাহ করব”।
“ব্যয়মূল্যে যার দাম প্রতি ইউনিট প্রায় 2.5 ইউরো ($ 2.8) বা ভারতীয় মুদ্রাতে আজকের মার্কিন ডলারের মূল্য হিসেবে ২০৮ টাকা।
তিনি আরও যোগ করেন যে “আমরা আশা করছি এই বছরের শেষ নাগাদ একটি সফল ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হব … সম্ভবত কিছুটা আগেও। অর্থাত্ যদি সব কিছু ঠিকঠাক হয় তাহলে আসন্ন শরত্ কালে আমাদের প্রত্যাশিত তিন ধাপের ফলাফলের শেষেই এই ভ্যাক্সিন তৈরি করতে পারব।
যদিও এর আগেই মার্কিন কোম্পানী জনসন ও জনসন “অলাভজনক” মূল্যে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
যদিও এর উল্টোদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানী ফাইজার, মার্ক এবং মোদার্না এই মঙ্গলবার মার্কিন সংসদ সদস্যদের কাছে নিশ্চিত করেছেন যে তারা কস্ট প্রাইসে ভ্যাকসিন বিক্রি করবেন না।
সরিওত আশাবাদী এই দেখে যে এই ভ্যাকসিনটি প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে। এবং সর্বোপরি যেকোনো গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই!
যদিও পণ্যটি বাজারের জন্যে উত্পাদন করার আগের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এর তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল আরও বিস্তৃত নমুনার উপর পরিচালনা করা হবে।
মিস্টার পাস্কাল সরীয়ত বূলেন যে “আমরা নিয়ামকদের (রেগুলেটর) সাথে হাতে হাত রেখে কাজ করছি। আমরা প্রতিদিনের ভিত্তিতে আমাদের ডেটা আদান-প্রদান করছি যাতে খুব দ্রুত মূল্যায়ন করতে পারি। আমরা ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করে দিয়েছি যাতে আমাদের হাতে সময় থাকে আগামীর প্রস্তুতির জন্যে।
তিনি আরও যোগ করেছেন যে কয়েকটি গ্রুপ “বেশ কয়েকটি অঞ্চলে” পণ্য উত্পাদন শুরু করে দিয়েছে যাতে ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলি ইতিবাচক ফলাফল দিলেই তারা “সরবরাহ শুরু করে দিতে পারে”।
গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে ৫০০ জনেরও বেশি লোককে একত্রিত করে একটি পৃথক ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে যে বেশিরভাগই অ্যান্টিবডি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে জয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী ল্যাবগুলিতে একটি অলিখিত প্রতিযোগিতা চলছে। আসলে প্রত্যকেই এই বিশ্ব স্বাস্থ্য সমস্যাকে দূর করতে আগ্রহী যা বিগত এক দশকে দেখতে পাওয়া যায় নি।
23 জন মানব স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে অগ্রগতির জন্যে 200 টিরও বেশি প্রার্থীর- ভ্যাকসিন (ক্যান্ডিডেট ভ্যাকসিন) তৈরি করা হচ্ছে।
এই সাক্ষাতকারটি ব্রিটেনের আরটিএল (RTL) রেডিও তে প্রচারিত হয়েছে।