দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সোমবার সকাল ৮ টায় শেষ হওয়া শেষ ২৪ ঘন্টায় ভারতে ২০,০২১ টি নতুন কোভিড-১৯টি মামলার রিপোর্ট সামনে এসেছে। এই মূহুর্তে রেকর্ড করা মোট মামলার মধ্যে ২.৭৭ লক্ষ মামলা বর্তমানে সক্রিয় এবং ৯৭.৮২ লক্ষেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। এর মধ্যে রবিবার ২৭৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এর ফলে এখন দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৭ হাজারেরও বেশি। গতকাল নতুন করে ৭.১৫ লক্ষ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যা এতদিনের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিম্ন। এর ফলে সোমবারেও নতুন সংক্রমণ অনেক কম রেকর্ড হতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
অন্যদিকে ভারতের টীকা সরবরাহ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য লজিস্টিক বিষয়ের সামর্থ্য পরীক্ষার লক্ষ্যে কোভিড-১৯ ডামি টিকাকরণ অভিযান শুরু হচ্ছে। শুষ্ক দৌড় বা Dry Run , দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম গণ টিকাকরণ কর্মসূচী। যা আজ পরিচালিত হবে অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, পাঞ্জাব এবং আসামে। এই টিককরণ বিশেষ করে গণ (Mass) টিকাকরণ সফল হলে ভারতবর্ষের স্বাস্থ্য খাতে একটি আমূল বিপ্লব ঘটবে বলা চলে। এখন প্রত্যেকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে এই টিকাকরণের দিকেই।
পঞ্জাবের লুধিয়ানা ও শহিদ ভগত সিং নগরে চলবে ড্রাই রান। গুজরাতের আহমেদাবাদেও চলবে করোনার ভ্যাকসিনের ড্রাই রান। আহমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা যুদ্ধের সামনের সারির সৈনিকরা এই ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রথম দাবিদার। স্বাস্থ্যকর্মীরদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের ড্রাই রানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, চার রাজ্যের জেলা হাসপাতাল, শহরাঞ্চল, গ্রামীণ এলাকাগুলিতে কোভিড-ভ্যাকসিনের ড্রাই রান চালানো হবে। করোনা ভ্যাকসিনের বন্টন প্রক্রিয়া, সংরক্ষণ থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবেন স্বাস্থ্য আধিকারিক ও ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা।
সোমবার ও মঙ্গলবার চলবে এই কর্মসূচি। করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক এই কর্মসূচী মাধ্যমে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য হিমঘর ও বন্টনের জন্য পরিবহণের কী ব্যবস্থা রয়েছে তা চার রাজ্যেই খতিয়ে দেখবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিক ও টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। গোটা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়া হবে।
নতুন বছরের শুরু থেকেই করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। সেই মতো তত্পরতা নেওয়া আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল অফিসার, ভ্যাক্সিনেটর, সুপারভাইজার, ডেটা ম্যানেজার, আশাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে।
কীভাবে ভিড় এড়িয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ করা যায়, সেব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই মতো এবার তাঁদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে প্রথম পর্বের এই ভ্যাকসিনেশনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করোনা যুদ্ধে শরিক স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশকর্মী-সহ প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধাদের বেছে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য ইতালি, জার্মানি এবং ফ্রান্স সহ ইউরোপীয় দেশগুলো রবিবার তাদের টিকা প্রচারাভিযান শুরু করেছে।মহাদেশের দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান তালিকা হিসেবে তারা তাদের প্রথম করোনাভাইরাসের নতুন ধরণের ঘটনা চিহ্নিত করেছে। গত ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩,৫০০ জনেরও বেশী মানুষ এই ভাইরাস ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের বেশীরভাগই যুক্তরাজ্যে। অন্যদিকে ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, ইজরায়েল, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষমতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া নতুন দেশ হিসেবে সোমবার করোনা’র নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রথম কেস রেকর্ড করেছে।