দ্য ক্যালকাটামিরর ব্যুরো: আজ ২৯ জুলাই বিকালে প্রত্যাশিত প্রথম ব্যাচের পাঁচটি রাফাল বিমান আম্বালার মাটিতে অবতরণ করার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন –“রাফাল জেট ভারতের মাটি স্পর্শ করার পর দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে নয়া অধ্যায়ের সূচনা হল”।
রাফাল জেট হরিয়ানার আম্বালা বায়ুসেনার ১৭ নম্বর ঘাঁটিতে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের স্বাগত জানিয়ে ট্যুইট করেন তিনি। তিনি লেখেন, ‘যুদ্ধের ময়দানে নানা ভূমিকায় কাজ করতে সক্ষম এই বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার সামগ্রিক ক্ষমতায় বিপ্লন এনে দেবে।’
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও লিখেছেন, ‘এটি ববাস্তবিক একটি সঠিক সময় এবং এএই মূহুর্তে ভারতীয় বায়ুসেনার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি দারুণ খুশি। যারা ভারতের অন্তর্বর্তী ভূখণ্ড দখলের জন্য পা বাড়াচ্ছেন তারাই আমাদের এই নতুন ক্ষমতায়নে উদ্বিগ্ন হবে।’
বুধবার সকালে এই ট্যুইটের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফ্রান্স সরকার, দাসল্ট অ্যাভিয়েশন ও ফ্রান্সের অন্যান্য সহযোগী কোম্পানিগুলিকে ধন্যবাদ জানান।
কোভিড-১৯ এর সামগ্রিক সংকটে নানা বিধিনিষেধ থাকা সত্বেও সঠিক সময়ে বিমান ও অস্ত্রের ডেলিভারি করার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে নিউ দিল্লি। রাফাল জেট কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও ধন্যবাদ জানান রাজনাথ সিংহ। তিনি লেখেন, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই ফ্রান্সের সঙ্গে সরকারি চুক্তির মাধ্যমে বিমানগুলি কেনা সম্ভবপর হয়েছিল। তাঁর এই সাহস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে ধন্যবাদ জানাই।’
ইতিমধ্যে রাফাল বিমান অবতরণের আগে থেকেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ঘিরে ফেলা হয়েছিল আম্বালা। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। উল্লেখ্য রাফাল বিমানের প্রথম ব্যাচের পাঁচটি বিমান বুধবারই ভারতের মাটি ছোঁয়। বুধবার বিকেলে হরিয়ানার আম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণ করে বিমানগুলি।
আপাতত আম্বালাতেই থাকবে রাফাল স্কোয়াড্রন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সোমবার ফ্রান্সের মেরিগানক এয়ারবেস থেকে রাফালের পাঁচটি বিমান নিয়ে রওনা দেন ভারতীয় সাত পাইলট। দীর্ঘ ৭০০০ কিলোমিটার পেরনোর পথে মাঝ-আকাশেই জ্বালানি ভরিয়েছে বিমানগুলি আর একবারই থেমেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে। এই পাঁচটি জেটের মধ্যে তিনটি এক আসনবিশিষ্ট ও দুটি দুই আসনের।
এ দিন আম্বালা এয়ারফোর্স স্টেশনের আশপাশে ছবি তোলা বা ভিডিয়ো শ্যুট করায় নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বায়ুসেনা ঘাঁটির তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ব্যক্তিগত ড্রোন ওড়ানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢুলকোট, বলদেব নগর, গারনালা ও পাঞ্জখোরা-সহ এয়ারবেস সংলগ্ন গ্রামগুলিতেও জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। চার বা তার বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এয়ারবেসের আশপাশের আবসন এলাকায় চলছে পুলিশি টহলদারি। রাস্তায় রাস্তায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড।
এক কথায় ভারতীয় সামরিক ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টিকারী রাফাল চুক্তি অবশেষে বাস্তব হল। আর এই কৃতিত্বে ভারতীয় সেনা, কেন্দ্রীয় সরকার সহ সমগ্র ভারত আজ গর্বিত।