দ্যা ক্যালকাটামিরর ব্যুরো: জনপ্রিয় যুবা অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু রহস্য আবার একটি অন্যদিকে মোড় নিতে চলেছে। সম্প্রতি প্রয়াত অভিনেতার চর্চিত গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে সুশান্তের পরিবার। অন্যদিকে রিয়া তার বিরুদ্ধে বিহারে পুলিশের তদন্ত শুরু হতেই, এই তদন্ত যাতে মুম্বই পুলিশের হাতে থাকে, তার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও করেছেন। তার এই আচরণ সুশান্তের মৃত্যু যে নিছক আত্মহত্যা নয় সে দিকেই কী ইঙ্গিত করছে না?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যুবা অভিনেতা সুশান্ত সিংহের প্রয়াণের পর তার অনুগামীরা নেট দুনিয়াতে প্রতিবাদের ঝড় তুলে দিয়েছে। এমনকী মুম্বাই পুলিশের তদন্তের প্রতি আস্থা না রেখে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সিবিআই তদন্ত চেয়ে ট্যুইটারে হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডও তৈরি করেছে। উল্লেখ্য সেই সময় রিয়া চক্রবর্তী নিজেও অমিত শাহ’র সাথে দেখা করে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন, কিন্তু হটাত্ করে এই মামলাতে বিহার পুলিশের অনুপ্রবেশে তার (রিয়ার) এই ৯০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া রহস্যকে জটিল করছে।
এ দিকে, মুম্বই পুলিশের কেউ রিয়াকে সাহায্য করছেন বলে পালটা তোপ দেগেছেন সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিং। সেই সাথে সাথে এই কেসে নয়া ইন্ধন যোগালেন সুশান্তের ঘনিষ্ট বন্ধু তথা ক্রিয়েটিভ কনটেন্ট ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানি।
নেটিজেনরা সুশান্ত সিংহের মৃত্যুতে এই সিদ্ধার্থ পিঠানিও যে সম্পর্ক যুক্ত সে বিষয়েও বিভিন্ন কাহিনী খুঁজে বার করছেন। কিন্তু রিয়ার সাথে সাথে এবার তার আচরণও সন্দেহজনক বলে মনে হছে যখন ২৮ জুলাই বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে তার একটি ই-মেইল এসে পৌঁছয়।
পিঠানি এই ই-মেইলে অভিযোগ করেছেন যে, রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মিথ্যে বয়ান দেওয়ার জন্য তাঁকে জোর করছে সুশান্তের পরিবার। এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত ভাবেই লিখেছেন সিদ্ধার্থ। তার ই-মেইলের বয়ান অনুযায়ী গত ২২ জুলাই একটি হোয়াটসঅ্যাপ কনফারেন্স কলে তার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন সুশান্তের শ্যালক তথা সিনিয়র আইপিএস অফিসার ওপি সিং, সুশান্তের দিদি ও তৃতীয় এক ব্যক্তি। তাঁরা নাকি জানতে চান, রিয়া যখন সুশান্তের সঙ্গে থাকতেন, তখন কী পরিমাণ টাকা রিয়া খরচ করতেন।
পিঠানির এই ই-মেইলে আরও দাবি করা হয়েছে যে, গত ২৭ জুলাই ফের সিদ্ধার্থকে ফোন করেন ওপি সিং। তখন তিনি রিয়ার বিরুদ্ধে বিহার পুলিশের কাছে মিথ্যে বয়ান দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন সিদ্ধার্থের উপর।
পিঠানির কথায় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করা হয়েছিল। পরে নম্বরটি খতিয়ে দেখে জানতে পারেন, নম্বরটি নীলত্পল মৃণাল নামে এক ব্যক্তির। ইনিই সেই ব্যাক্তি যিনি বিহার পুলিশের সঙ্গে BMW-তে বসে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এই মামলার বিষয়ে তথ্য দিয়েছিলেন।
এই ই-মেইলে আরও লেখা হয়েছে যে, অজানা নম্বর থেকে আসা ফোন কলটি মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়, তা রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি।
ই-মেইলের শেষে সিদ্ধার্থ লিখেছেন, ‘রিয়ার বিরুদ্ধে যেটা আমি জানিই না, সেই নিয়ে বয়ান দেওয়ার জন্য আমায় চাপ দেওয়া হচ্ছে।’
সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিং বৃহস্পতিবারই অভিযোগ করেছিলেন, ‘রিয়া যখন সুপ্রিম কোর্টেই গেলেন, তখন এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে আগের মতই পিটিশন জমা দেওয়া উচিত ছিল।
আইনজীবী বিকাশ সিং কটাক্ষ করে বলেন যে পাটনায় FIR দায়ের করা হতেই রিয়া মুম্বইতে তদন্ত সরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে। তিনি ইঙ্গিত করে বলেন যে মুম্বই পুলিশের কেউ যে রিয়াকে ছায়াসঙ্গীর মত সাহায্য করছে, তা বুঝতে শার্লক হোমস হওয়ার প্রয়োজন নেই। ‘