দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : দেশের প্রথম করোনার ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সুখবর। ভারতের প্রথম করোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড বাজারে উপলব্ধ হতে আর মাত্র ৭১ দিনের অপেক্ষা। শুধু তাই নয়, এই ভ্যাকসিন আরও একটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ আর তা হলো- জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ভারত সরকার প্রতি ভারতীয়কে বিনামূল্যে এই করোনার ভ্যাকসিন দেবে। এই ভ্যাকসিনটি (Covishield) তৈরি করছে পুনের বায়োটেক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- ভারত সরকার এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে সিরাম ইনস্টিটিউটকে বিশেষ লাইসেন্স দিয়েছে। এর ফলে ভ্যাকসিন ট্রায়াল প্রোটোকলের শেষ প্রক্রিয়াটি খুবই দ্রুত গতিতে করা সম্ভব হবে। আশা করা যাচ্ছে আগামী ৫৮ দিনের মধ্যে এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্বের প্রথম ডোজটি শনিবার অর্থাত্ ২২ শে আগস্ট দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজটি প্রথম ডোজের থেকে ২৯ দিনের মাথায় দেওয়া যেতে পারে। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের ১৫ দিনের পর এর রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। তবে রাশিয়ার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত নয় বরং কোভিশিল্ড (Covishield)-র সব পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরই তা বাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে ভারত সরকার ও পুণের সিরাম ইন্সটিটিউট।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটি ১৭ টি নির্বাচিত কেন্দ্রে ১৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রের প্রায় ১০০ জনকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইংল্যাণ্ডের অ্যাস্ট্রা জেনিকা (Astra Zeneca) নামের একটি সংস্থা থেকে এই ভ্যাকসিন তৈরির সত্ব কিনেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। এর ফলে, ভারত সহ মোট ৯২ টি দেশে এই করোনার টিকা বিক্রি করতে পারবে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ।
কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে, সরকার সরাসরি সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন কিনে নেবে এবং প্রত্যেক ভারতীয়কে বিনামূল্যে সেই ভ্যাকসিন দেবে। জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৬৮ কোটি করোনার ভ্যাকসিন কিনবে। সরকারের পরিকল্পনা, অন্যান্য জাতীয় টিকাদান মিশনের মতো এটিও সারা দেশ ব্যাপী প্রচার ও প্রয়োগ চালানো হবে।
সরকারি এই উদ্যোগকে স্বাগত। কিন্তু তাও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, কীভাবে দেশের ১৩০ কোটি মানুষের জন্য পার্যাপ্ত হবে ৬৮ কোটি টিকা? তবে জানানো হয়েছে যে, এ নিয়ে সরকারের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড ছাড়াও বাকি টিকার জন্যে আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের উদ্যোগে তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং জাইকোভি-ডি ( ZyCoV-D) উপর নির্ভর করা হবে।
যদি সময়মতো পরীক্ষা শেষ হয়, সিরাম ইনস্টিটিউটের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি মাসে ৬ কোটি করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করবে তারা। যার লক্ষ্যসীমা ২০২১ এপ্রিলের মধ্যে বাড়িয়ে ১০ কোটি করা হবে যাতে দেশের একজন নাগরিক ও এই টিকার আওতার বাইরে না পড়েন।