দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো :পাঞ্জাবে করোনা সংক্রমণ ফের ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। রাজ্য জুড়ে কড়া হাতে করোনা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপটেন অমরিন্দর সিং গত ২০ অগস্ট ঘোষণা করেছিলেন যে ২১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে নাইট কারফিউ চলবে। সেইসঙ্গে তিনি সমস্ত রকম সামাজিক ও রাজনৈতিক জমায়েতও নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু এই কড়া পরিস্থিতিতে একটি খবর স্তম্ভিত করে দিয়েছে রাজ্যের মানুষ থেকে সরকার উভয়কেই। আগামী শুক্রবার অর্থাত্ ২৯ শে আগস্ট থেকেই পাঞ্জাব বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা, আর আজ সুরক্ষা হিসেবে ২৩ মন্ত্রী-বিধায়কের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে এল, যেখানে ২৩ মন্ত্রী বিধায়ক সকলেই করোনা পজিটিভ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের মতে, ‘বিধানসভার মধ্যেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থাটা কী বুঝতে পারছেন! এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের পরীক্ষাও আয়োজন করার কোনো মানেই হয় না।’ উল্লেখ্য, করোনা আবহে চতুর্দিকে বাস-ট্রেন বন্ধ থাকা সত্বেও JEE ও NEET পরীক্ষা পেছয় নি কেন্দ্রীয় সরকার। আজ সেই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাত রাজ্যের অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা। সেই বৈঠকে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাথে ছিলেন অমরিন্দর সিংও।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে বৃহস্পতিবার থেকে বাড়ি থেকেই প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পড়ুয়ারাও। বাড়ি থেক না বেরিয়ে কালো পতাকা দেখিয়ে, হাতে ও কপালে কালো ব্যান্ড বেঁধে, কালো মাস্ক পরে চলবে বিক্ষোভ। যদিও কেন্দ্র পরীক্ষা পিছোনোর কোনও যুক্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। এমন কী সুপ্রীম কোর্টেরও একই মত্।
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব, নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির হারের নিরিখে দেশে এখন এক নম্বরে রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই খারাপ অবস্থা অর্থনীতির। তবু মানুষের কথা ভেবেই আবারও লকডাউনের পথেই হাঁটছে সেই রাজ্য। বর্তমানে পাঞ্জাবে মোট প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ১১৭৮ জনের। কিন্তু সারা দেশে নতুন করে সংক্রমণের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবের প্রথমেই থাকা খুবই উদ্বেগের। এর মধ্যে বিধায়ক-মন্ত্রীদের ২৩ জনের একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে রাজ্য জুড়ে।
পঞ্জাবের সামগ্রিক অবস্থা প্রসঙ্গে অমরিন্দর সিং খুব চিন্তিত। দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন যে সেই রাজ্যের অর্থনীতির প্রতি তিনি খেয়াল রাখলেও একমাত্র কঠোর লকডাউন ছাড়া করোনা ঠেকানোর কোনো উপায় নেই তাঁদের হাতে। তাই সম্পুর্ণ না হলেও আগামী ৩১ তারিখ পর্যন্ত আংশিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঞ্জাব সরকার। সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত থাকবে কঠোর নাইট কারফিউ। খুব একটা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই সময়ের মধ্যে কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। সেইসঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গের মতই শহরাঞ্চলে সপ্তাহান্তে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন পালিত হবে। এই মূহুর্তে রাজ্যজুড়েই যেকোনও ধরনের জমায়েতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।