(আজ ধ্যানচাঁদ ১১৫। ‘হকির জাদুকর’-এর জন্মদিন। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে প্রতিবছর ২৯ আগস্ট যা এখন পালিত হয় জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে। এই উপলক্ষে ধ্যানচাঁদের সঙ্গে কলকাতার ‘সম্পর্ক’ নিয়ে বিশেষ লেখা।)
‘খেলার শহর হিসেবে কলকাতা আমাকে সবসময়ই আলাদা আকর্ষণ করে।’
পুরনো দিনের অনেক সাক্ষাৎকারেই এরকম কথা বলেছেন ধ্যানচাঁদ। আত্মজীবনী ‘গোল’-এও বারবার উঠে এসেছে কলকাতার কথা। কলকাতার মানুষের ক্রীড়াপ্রেম সম্পর্কেও অনেক ভাল ভাল কথা লিখেছেন ‘হকির জাদুকর’। যেমন তিনি লিখেছেন, ‘কোনও একটি বিশেষ খেলার প্রতি কলকাতার দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত নয়। কোন দল খেলছে, খেলোয়াড় কে, কলকাতার ক্রীড়াপ্রেমী জনগনের কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল খেলা। ভারতের অন্যান্য বড় শহরের ছবি কলকাতার ঠিক উল্টো। বোম্বেতে যত উত্তেজনা, যত উন্মাদনা ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে। তা যে স্তরের ক্রিকেট ম্যাচই হোক না কেন। ফুটবল নিয়ে তেমন উৎসাহ চোখে পড়ে না। এমনকী রোভার্স কাপে নানা দলের নামী ফুটবলাররা অংশ নিলেও না। অথচ যে কোনও খেলাতেই কলকাতা উৎসবের চেহারা নেয়। ফুটবল মরশুমে তো হাজার হাজার মানুষ ময়দানে ভিড় জমান। আমার খেলোয়াড় জীবনে বেটন কাপেও দেখেছি কলকাতা ময়দানে মানুষের ঢল নামতে। বিদেশের কোনও ক্রিকেট দলের খেলা দেখতেও কলকাতা ময়দানে আছড়ে পড়ে মানুষের ঢেউ। সাউথ ক্লাবে লন টেনিস খেলায়ও দেখা যায় একই ছবি।’


তাঁর সেই প্রিয় খেলার শহরে তিনি প্রথম কবে এসেছিলেন?
১৯২৮ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম আন্তঃ প্রাদেশিক হকি প্রতিযোগিতা। সেখানে ইউনাইটেড প্রভিন্সেসের হয়ে খেলতে এসেছিলেন ধ্যানচাঁদ। সেই প্রথম কলকাতায় আসা। এখানে একটি ব্যাপার উল্লেখ করা খুবই জরুরি। সেটা হল কী করে তিনি ‘ধ্যান সিং’ থেকে ‘ধ্যানচাঁদ’ হয়ে উঠলেন। যা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক। সবচেয়ে বেশি যেটা প্রচলিত, তা হল, সেবার কলকাতায় খেলতে এসেছিলেন ‘ধ্যান সিং’। কলকাতা থেকে ফিরেছিলেন ‘ধ্যানচাঁদ’ হয়ে। ‘সিং’-এর জায়গায় ‘চাঁদ’ উপহার দিয়েছিল কলকাতা। ধ্যানচাঁদের পুত্র অশোক কুমারের অতীতের একটি লেখার কিছু অংশ, ‘‘আমার ঠাকুর্দা তাঁর দ্বিতীয় পুত্রর নাম রেখেছিলেন ধ্যান সিং। এই সামান্য তথ্যটুকু আমি জেনেছি অনেক পরে। কেন না, আমার কাছে বাবার নামের পাশে ওই ‘সিং’ পদবিটা অচেনা লাগত। ‘সিং’-এর জায়গায় ‘চাঁদ’ উপহার দিয়েছিল কলকাতা। ....১৯২৮ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম আন্তঃ প্রাদেশিক হকি প্রতিযোগিতা। এখনকার জাতীয় হকির আগের চেহারা। বাবা সেবার ইউনাইটেড প্রভিন্সেস দলে। তাঁর দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বাবার খেলা কলকাতার দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। তাঁর স্টিকওয়ার্কের জাদু শ্রদ্ধেয় পঙ্কজ গুপ্তকে এতটাই মোহিত করেছিল যে ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় বাবাকে তিনি তুলনা করেছিলেন চাঁদের প্রভার সঙ্গে। উপমা তথা উচ্ছ্বাসটা লোকের এত মনে ধরে যে পৈতৃক পদবিটা উচ্চারণ করা ছেড়ে দেয়।’’


অতীতের অনেক পত্রপত্রিকায়ও এরকম লেখা আছে। আবার ‘ধ্যান সিং’ থেকে ‘ধ্যানচাঁদ’ হয়ে ওঠার অন্যরকম কাহিনিও প্রচলিত রয়েছে। অনেক বছর আগে ওঁর নিজের শহরে গিয়ে প্রবীণদের মুখে শুনেছিলাম, ‘ধ্যানচাঁদ’ হয়ে ওঠার অন্যরকম গল্প। বিকেল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যাওয়ার পরও চাঁদের আলোয় একাএকা বল-স্টিক নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যেতেন ‘ধ্যান সিং’। সেই অনুশীলন দেখে ওখানকার মানুষই ওঁকে ‘ধ্যানচাঁদ’ বলতেন। একাধিকবার ঝাঁসিতে ধ্যানচাঁদের বাড়িতে গিয়েছি। তখন কথা বলে দেখেছি, ওঁর পরিবারের লোকেদের মধ্যেও এনিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।
টানা তিনটি (১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৬) অলিম্পিকে খেলেছেন। তিনটিতেই সোনা জিতেছেন। তবু অলিম্পিকে নয়, ভারতের হয়ে অন্য কোথাও নয়, কোনও সামরিক দলের হয়ে নয়, ধ্যানচাঁদ গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি জীবনের সেরা ম্যাচটি খেলেছেন ঝাঁসি হিরোজের হয়ে। কোথায়? কবে? তিনি লিখেছেন, ‘কেউ যদি জানতে চান, আমি জীবনের সেরা ম্যাচটা কোথায় খেলেছি, বিনা দ্বিধায় বলব, ১৯৩৩ সালে বেটন কাপ ফাইনালে। যাতে আমাদের ঝাঁসি হিরোজের প্রতিপক্ষ ছিল ক্যালকাটা কাস্টমস।’
হকির জাদুকর আরও লিখেছেন, ‘আমার জীবনের একটা লক্ষ্য ছিল বেটন কাপ জেতা। সুযোগ হচ্ছিল না। সেবারও আমি নিশ্চিত ছিলাম না, বেটন কাপে খেলতে পারব কিনা! শেষ পর্যন্ত আমার কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়ে যাই। এবং কলকাতায় ঝাঁসি হিরোজ দলের সঙ্গে যোগ দিই।’ সেবার বেটন কাপে খেলতে এসে ধ্যানচাঁদ অবশ্য দলের সঙ্গে হোটেলে থাকেননি। ছিলেন পঙ্কজ গুপ্তর বাড়িতে।
নানা কারণে সেবারের ‘কলকাতা সফর’ ধ্যানচাঁদ সারা জীবন মনে রেখেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘প্রথমত, সেবার বেটন কাপে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। দ্বিতীয়ত, চারদিনে আমাদের পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হয়েছিল। শেষ কারণ, ফাইনালের ঠিক আগে আমি রক্তামাশয় আক্রান্ত হই। যা আমার জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক ছিল।’ তবু তিনি ফাইনাল খেলেছিলেন। ক্যালকাটা কাস্টমস দলে সেবার তারকার মেলা। সৌকত আলি, আসাদ আলি, সীম্যান, মহসিন, ডিফহোল্টস, আরও অনেকে। পাশাপাশি ধ্যানচাঁদ, রূপ সিং, ইসমাইলকে বাদ দিলে ঝাঁসি হিরোজে পরিচিত আর কেউ ছিলেন না। ধ্যাঁনচাদ লিখেছেন, ‘সংখ্যার বিচারে আমাদের দলে নামী খেলোয়াড় কম ছিল। কিন্তু পুরো দলের মনোভাব ছিল—করতে হবে, নইলে মরতে হবে। ওই মনোভাবেই আমাদের জয় এসেছিল।’
ফাইনালের একমাত্র গোলটি প্রসঙ্গে ধ্যানচাঁদ লিখেছেন, ‘কাস্টমস তখন আমাদের খুব চাপে রেখেছে। হঠাৎই ওই চাপের মাঝে নিজেদের মাঝমাঠ থেকে আমি একটা লম্বা পাস বাড়াই ইসমাইলকে। সে জেসি ওয়েন্সের গতিতে বল নিয়ে অর্ধেক মাঠ অতিক্রম করে যায়। কাস্টমসের লেফট হাফ এবং গোলকিপারের ভুল বোঝাবুঝির পুরো সুযোগ নেয় ইসমাইল। এবং বল জালে পাঠায়।’
শুধু বেটন কাপই নয়, ঝাঁসি হিরোজ সেবার কলকাতায় লক্ষ্মীবিলাস কাপ চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।
বেটন কাপ ও কলকাতার হকি সম্পর্কে খুব উঁচু ধারনা ছিল ধ্যানচাঁদের। আত্মজীবনী ‘গোল’-এ ধ্যানচাঁদ লিখেছেন, ‘আমি বলতে বাধ্য, এদেশে বেটন কাপই সম্ভবত সংগঠনের দিক দিয়ে সেরা হকি প্রতিযোগিতা। কলকাতা ময়দানে ৩/৪টি প্রথম শ্রেণীর হকি মাঠ রয়েছে। ভালভাবে সূচি মেনে প্রতিযোগিতা চালানোর ক্ষেত্রে এটা সুবিধে।’
নানান কারণে আরও অনেকবার ধ্যানচাঁদ কলকাতায় এসেছেন, খেলেছেন। এখানে তার কয়েকটি তুলে ধরা যাক। যেমন ১৯৩৪ সালে দলের সঙ্গে বেটন কাপ খেলতে কলকাতায় আসতে পারেননি। তাঁর আসার কথা ছিল পরে। সেই ভাবে ট্রেনেও উঠেছিলেন। কিন্তু তিনি কলকাতায় পৌঁছনোর আগেই মোহনবাগানের কাছে হেরে ঝাঁসি হিরোজ বেটন কাপ থেকে বিদায় নেয়। দলের ওই হার মেনে নিতে পারেননি ধ্যানচাঁদ। সেবার বেটনের পর লক্ষ্মীবিলাস কাপে ঝাঁসি হিরোজের খেলার কথা ছিল না। কিন্তু মোহনবাগানের কাছে ওই হারের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন হকির জাদুকর। তিনি খেলোয়াড়দের বলে লক্ষ্মীবিলাস কাপে খেলতে রাজি করিয়ে ফেলেন। সত্যি, প্রতিশোধ নিতে পেরেছিল ধ্যানচাঁদের দল। বেটন কাপে তৃতীয় রাউন্ডে মোহনবাগানের কাছে ঝাঁসি হিরোজ হেরেছিল ২-৩ গোলে। আর লক্ষ্মীবিলাস কাপের ফাইনালে প্রতিশোধ নিয়েছিল মোহনবাগানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে।
বেশ বেশি বয়সেই, ১৯৪৯ সালের মার্চ মাসে কলকাতায় এসেছিলেন একটি আর্মি হকি প্রতিযোগিতায় খেলতে। ধ্যানচাঁদ ছিলেন ইস্টার্ন কমান্ড দলের অধিনায়ক। তাঁর দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতার ঠিক পরেই কলকাতায় একটি খেলা হয় সেনা কল্যাণ তহবিলের জন্য। ধ্যানচাঁদের সেনা দল খেলে অসামরিক একটি দলের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচের পরই বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা ধ্যানচাঁদকে অনুরোধ জানান, এপ্রিলে আবার কলকাতায় আসার জন্য। এপ্রিলে অলিম্পিক একাদশের বিরুদ্ধে তিনি খেলেন অবশিষ্ট দলের হয়ে। অবশিষ্ট দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। অলিম্পিক একাদশ জিতেছিল ২-১ গোলে। অবশিষ্ট দলের গোলটি করেছিলেন ধ্যানচাঁদ। পুরনো সংবাদপত্রের পাতায় চোখ ফেললে দেখা যায়, সেই গোলটির উচ্চ প্রশংসা। যা দর্শকদের মনে করিয়ে দিয়েছিল ধ্যানচাঁদের সেরা সময়কে। ওই ম্যাচটি দেখতে গ্যালারি উপচে পড়েছিল। র্যামপার্টও ছিল ভরা। ধ্যানচাঁদ লিখেছেন, ‘ভারতে তার আগে কোনও হকি ম্যাচে আমি এত দর্শক দেখিনি।’ সেই ম্যাচে ১৪৯২৮ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। সেটাও ছিল ভারতে তখন রেকর্ড। বেটন কাপের সময়েই হয়েছিল ওই ম্যাচটি। সেবার বেটন কাপের পুরো সময়টাই কলকাতায় ছিলেন হকির জাদুকর। ছুটির মেজাজে। সেবার বেটন কাপ ফাইনালের পরও একটি ম্যাচ খেলতে হয়েছিল ধ্যানচাঁদকে। সেটাও ছিল সেনা কল্যণ তহবিলের জন্য। বাংলা বনাম অবশিষ্ট ভারত। ধ্যানচাঁদ ছিলেন অবশিষ্ট ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ওই ম্যাচের পর বি এইচ এ সংবর্ধনা দিয়েছিল ধ্যানচাঁদকে।
১৯৬৫ সালে কলকাতাতে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের এক প্রশিক্ষণ শিবিরে খেলা শেখাতে এসেছিলেন হকির জাদুকর। ১৫ দিনের সেই প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছিল ময়দানে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ ও ইডেন উদ্যানে। ১৯৭১ সালেও ধ্যানচাঁদ কোচ হিসেবে কলকাতায় এসেছিলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দলকে প্রশিক্ষণ দিতে।
ছোটবেলা থেকেই হকির জাদুকরের হবি ছিল শিকার করা, মাছ ধরা। একবার কলকাতার নিকটবর্তী ব্যারাকপুরের মানুষও তাঁর মাছ ধরার একাগ্রতা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেটা ১৯৬৯ সাল। তখন কলকাতা পুলিশের ডি সি (হেড কোয়ার্টার্স) ছিলেন এম এন বসু। তিনি ছিলেন ধ্যানচাঁদের খুবই ঘনিষ্ঠ। তাঁরই আমন্ত্রণে ধ্যানচাঁদ এসেছিলেন ব্যারাকপুরে। মাছ ধরার ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনিই। সকাল আটটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত ছিপ-বড়শি নিয়ে বসেছিলেন পুকুরের ধারে। দুপুরের খাবার সাজানোই পড়েছিল। মাছ না ধরে ক্ষণিকের জন্যও ছিপ হাত থেকে নামাতে রাজি হননি তিনি।
কলকাতার প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা বারবার লেখা হয়েছে। তিনি কলকাতার ডাক কখনও উপেক্ষা করতে পারতেন না। শুধু খেলা বা মাছ ধরা নয়, কলকাতায় এসে একবার জানতে পারেন, ভীস্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের গানের অনুষ্ঠান রয়েছে। কর্মকর্তাদের বলেন, একটা কার্ডের ব্যবস্থা করে দিতে। কার্ডের ব্যবস্থা হতেই তিনি চলে গিয়েছিলেন গান শুনতে।
কলকাতায় অবশ্য একবার একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি। মজা করে সেটা লিখেছেন আত্মজীবনীতেও। ১৯২৮ সালে আন্তঃ প্রাদেশিক হকি প্রতিযোগিতার সময় বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশন এক সন্ধ্যায় ওয়াই এম সি এ-র ওয়েলিংটন শাখায় ‘হকি ডান্স’ আয়োজন করেছিল। অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও ধ্যানচাঁদ ওখানে যাননি। পরের দিন সকালে অন্য খেলোয়াড়রা বলেছিলেন, অনুষ্ঠানে খুব আনন্দ, মজা হয়েছে। ধ্যানচাঁদ না গিয়ে সেই আনন্দ, মজা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই প্রসঙ্গ টেনে ধ্যানচাঁদ লিখেছেন, ‘আমার মনে হয়নি কোনও কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাপারটা যদি এখন হত, আমি অবশ্যই ওই পার্টিতে যেতাম। তবে নাচতে নয়, ঠাণ্ডা বিয়ারের আকর্ষণে।’