দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ করোনা আবহে এবার চাঞ্চল্য অযোধ্যায়। অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরীর খবর আমরা সকলেই জানি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে টেলিভিশন,খবরের কাগজে শীর্ষ স্থান অধিকার করে নিয়েছিল এই রাম মন্দির। তবে এবার হলো এক অন্যরকম কান্ড। বাড়ির অমতে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে সেরে নিলেন দুই যুবতী। হ্যাঁ, অযোধ্যার মাটিতে সমকামী বিবাহ। কিছুদিন আগে ‘৪ মোর শটস’ নামে একটি ওয়েব সিরিজের মুক্তি হয়েছিল, যেখানে এই রকম দুই যুগলের বিবাহ নিয়ে এক অনবদ্য বন্ধুত্বের গল্প।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার। দুই যুবতীর বিবাহ সামনে আসায় বাড়ির লোক থেকে প্রতিবেশী সকলেই তা নিয়ে তীব্র বিক্ষোভ জানিয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই মূহুর্তে তা ভাইরাল হয়। সমলিঙ্গের এই বিয়ে নিয়ে অলিতে গলিতে আলোচনা একেবারে তুঙ্গে। ভারতের শীর্ষ আদালত সমলিঙ্গ বিবাহ ও একসাথে থাকা নিয়ে আইন পাশ করলেও আমাদের সমাজ এখনও যে তা মানতে নারাজ। আর তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া গেল এই দুই যুবতীর ঘটনায়।
এই ২১ শতকে বিশ্বজুড়ে সমলিঙ্গ প্রেমে স্বীকৃতি মিললেও বাস্তব সমাজে এখনো তা সোনার পাথরবাটি। উল্লেখ্য, বাঙালি চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ অনেক আগেই তার চলচ্চিত্রে এই সমলিঙ্গের প্রেমের গল্প দেখিয়েছেন। এছাড়া বলিউডে শাকুন বাতরা পরিচালিত কাপুর অ্যান্ড সনস্, শুভ মঙ্গল যাদা সাবধান প্রভৃতির মতো ছবি তৈরী হলেও এখনও সামাজিক ভাবে এই ধরণের যুগল সমাজে ব্রাত্য।
অযোধ্যায় এই দুই যুবতীর বিবাহের খবরটি ছড়াতে না ছড়াতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং তার সূত্র ধরে ঘটনাটি পৌঁছায় থানায়। এই দুই যুবতীর মধ্যে একজন অযোধ্যার এবং অন্যজন কানপুরের বাসিন্দা। একজনের নাম বর্ষা আর অন্যজন হলেন একতা। আত্মীয়তার সুত্রে দুপক্ষের আলাপ এবং সেখানে থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে আর তারপর অবশেষে বিবাহে।
পুলিশি জেরায় জানা গিয়েছে বর্ষা আত্মীয়ের সঙ্গে কানপুরে যেতেন। এবং সেখানেই একতা নামের এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়। প্রেমের পর তার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দুজনের পরিবারই তাদের এই সিদ্ধান্ত মেনেনেননি, তাই তারা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
অযোধ্যার মেয়েটি কানপুরের মেয়েটিকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন। বিয়েতে অযোধ্যার যুবতীটি পুরুষদের পোশাক পরেন। বিয়ের পর ওই মেয়েটিকে তাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায়। অতঃপর বাড়িতে শুরু হয় অশান্তি। যা একসময় চরম আকার ধারন করে।
পুলিশ দুই যুবতীর ১৬৪ ধারায় বয়ান দায়ের করেন। তবে এই দুই যুবতীই হলেন প্রাপ্তবয়স্ক, তাও অযোধ্যার মতো জায়গা সমলিঙ্গ বিয়ে নিয়ে প্রচুর কথা শুরু হয়েছে। দুটি মেয়ে সমস্ত সমাজের চাপের বিরুদ্ধেও একই ভাবে এককাট্টা হয়ে রয়েছেন। তাঁদের দাবি তাঁরা বিয়ে করেছেন এবং পুরো জীবন একসঙ্গে থাকবেন।