দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ২০২০ একে একে কেড়ে নিয়েছে বিভিন্ন জগতের অনেক মুল্যবান রত্ন। এবারে ছন্দপতন চিকিত্সা জগতে। করোনার শিকার হলেন ভারতের প্রথম মহিলা কার্ডিওলজিস্ট এস আই পদ্মাবতী। দীর্ঘ ১১ দিনের লড়াইয়ের অবসান ঘটল আজ। প্রয়াত হলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর।
উল্লেখ্য, ১১ দিন আগে অর্থাত্ ২০’শে আগস্ট করোনার উপসর্গ নিয়ে ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হতে থাকে অবশেষে আজ রবিবার ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটের তরফ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। এই প্রসঙ্গে ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটের সিইও ও পি যাদব বলেছেন, “ডঃ পদ্মাবতীর দুটি ফুসফুসেই সংক্রমণ দেখা দেয়, সেপটিক শকের কারণে অঙ্গ বিকল হয়ে যায় এবং সেটাই তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে”।
প্রসঙ্গত, তাঁকে গড মাদার অফ কার্ডিওলজি বলা হতো। তিনি ১৯১৭ সালে তৎকালীন বার্মার মাগইউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর পর ডাক্তারী পাশ করেই তাঁর মানব সেবায় ব্রতী হওয়া। তাঁর সেই পথ চলা এখন বহু মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। ডাক্তার পদ্মাবতী যে সময়ে হার্টের চিকিত্সা করেছেন সেই সময় ভারতে কার্ডিওলজি সমন্ধে তেমন কিছু জানতেন না সাধারন মানুষজন। কিন্তু সেই আমলেও এস আই পদ্মাবতী কার্ডিলজি চিকিৎসার সঙ্গে সমার্থক ও উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হয়ে ওঠেন।
হৃদরোগ সংক্রান্ত চিকিৎসার পরিষেবায় তিনি আমৃত্যু কাজ করে গিয়েছিলেন। ১৯৮১ সালে তিল তিল করে গড়ে তোলেন ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউট। এমনকি শতবর্ষে পা দিয়েও ২০১৫ সাল পর্যন্ত দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে সপ্তাহে পাঁচদিন কাজ করে গিয়েছিলেন তিনি। উত্তর ভারতে ১৯৫৪ সালে লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে প্রথম কার্ডিও ক্যাথারাটাইজেশন ল্যাবরেটরি তারই গড়ে তোলা।
১৯৬৭ সালে মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজের ডিরেক্টর-প্রিন্সিপাল পদের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন তিনি এবং সেইসাথে আরউইন ও জি বি পন্থ হাসপাতালের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কার্ডিওলজিতে ডিএম কোর্সও প্রথম তাঁরই চালু করা। ১৯৬২ সালে অল ইন্ডিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতেও এই চিকিৎসক অগ্রণী ছিলেন। চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি অনেক সম্মান পেয়েছেন। ১৯৬৭ সালে পদ্মভূষণেও ভূষিত হন । ১৯৯২ সালে তাঁকে পদ্মবিভূষণে সম্মানিত করে তত্কালীন কেন্দ্রীয় সরকার।