দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দৈনিক প্রতি এক মিনিটে আক্রান্ত হচ্ছেন একজন মানুষ। একদিকে আক্রান্তের সংখ্যা ও যেমন বাড়ছে অন্যদিকে অভাব দেখা দিচ্ছে কর্মসংস্থানের। এহেন পরিস্থিতিতে পেট চালানোর দায় হয়ে যাচ্ছে সাধারন মানুষের। তবে এবারে পেটের দায়ে চিকিৎসা ছেড়ে অটো চালাতে হচ্ছে ৫৩ বছরের চিকিৎসকের! অবাক লাগছে তাই তো! স্বাভাবিক।
কর্ণাটকের বল্লারী জেলায় গত ২৪ বছর ধরে স্বাস্থ্য এবং পরিবার মন্ত্রকের অধীনে চাইল্ড হেলথ অফিসারের পদে কর্মরত ডা: রবীন্দ্রনাথ সিদাম। কিন্তু বর্তমানে রোজগারের তাগিদে স্টেথোস্কোপ, প্রেশক্রিপশন ছেড়ে পেটের দায়ে দাভানগর শহরে অটোর স্টিয়ারিং ধরতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি জানান, গত ১৫ মাস ধরে তাঁর বেতন আটকে। তাই তিনি এ কাজে নিযুক্ত হন।
কিন্তু কেন এ দুর্দশা?
এই প্রশ্নের উত্তরে রবীন্দ্রনাথ দায়ী করছেন এক আইএএস অফিসারকে। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে সেই অফিসারকে অন্যত্র পোস্টিং পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনরকম সাহায্য করেননি রবীন্দ্রনাথ। এরফলেই চটে যান ওই অফিসার, বন্ধ হয়ে যায় রবীন্দ্রনাথের বেতন! রবীন্দ্রনাথের বলেন, ‘ওই আইএএস অফিসার নাকি পরে বল্লারী জেলা পঞ্চায়েতের সি ই ও হিসেবে নিযুক্ত হন। তখন থেকেই পুরনো রাগের প্রতিশোধ তুলতে শুরু করেন ওই অফিসার’।
তিনি আরও বলেন, ”স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগ নিয়ে ওরা একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি বের করে, আমি কোন ভাবেই সেই ভুলের জন্য দায়ী ছিলাম না, তা প্রমাণও করি, কিন্তু তাও গতবছর জুন মাসের ৬ তারিখ আমায় কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনার ৪ দিন বাদে আমি কর্ণাটক অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যালে আবেদন করি এবং সেখানে আমায় পুনরায় বহাল করার রায় দেওয়া হয় কিন্তু তা করা হয়নি”।
সেই সময় চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ সিদাম জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসারের পদে যুক্ত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে আমি গ্রামীণ স্বাস্থ্য বিভাগে নিযুক্ত। বল্লারী জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় ভালো কাজ করায় পুরস্কার ও পেয়েছি। কিন্তু তাও আজ আমার এই দশা! আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। জানুয়ারি মাসে আমায় জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।বলা হয় করোনার কারণে আপাতত গ্রামীণ হাসপাতালেই কাজ করতে হবে। কিন্তু ওই আইএএস অফিসার সব জায়গায় স্বাক্ষর না করায় আমার গত ১৫ মাসের মাইনে আটকে”।