দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সনিয়া গান্ধী জাতীয় কংগ্রেসের সাংগঠনিক স্তরে বড়সড় রদবদল ঘটালেন। বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদকে কিছুটা আচমকাই দলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। তবে সম্প্রতি কংগ্রেসের একদল নেতা প্রকাশ্যে দলের অভ্যন্তরে সংস্কার এবং স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সরব হয়েছিলেন । যাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গুলাম নবি আজাদ।
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের শীর্ষ সংগঠনের তরফ থেকে শুক্রবার রাতেই এই রদবদল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় শুধু সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে নয় এমনকি হরিয়ানায় এআইসিসির পর্যবেক্ষক পদ থেকেও জম্মু-কাশ্মীরের এই নেতাকে অপসারণ করা হয়েছে। কংগ্রেসের ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে পরিচিত এই কাশ্মিরি নেতার পরিবর্তে বিবেক বনসলকে হরিয়ানায় দলের নতুন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। যদিও আজাদ জি কে নবগঠিত কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
যদিও আজাদ জি একা নন, আরও পাঁচজন শীর্ষ স্থানীয় কংগ্রেস নেতাকে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গুলাম নবি আজাদ ছাড়াও এই তালিকায় মল্লিকার্জুন খর্গে, মতিলাল ভোরা ও অম্বিকা সোনির নাম রয়েছে।
উল্লেখ্য, গুলাম নবী আজাদের অফিসিয়াল আজাদী’র পর কংগ্রেস দলের অন্দরে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হলেন রণদীপ সুরজেওয়ালা। সাধারণ সম্পাদকের পদ মর্যাদার সাথে সাথে তাঁর উপরে কর্নাটকের দলের ভার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই রদবদল ছাড়াও সনিয়া জি’কে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ছ’সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে রাহুল গান্ধীর অনুগত হিসেবে পরিচিত রণদীপ সুরজেওয়ালা’র নামও রয়েছে। সুরজেওয়ালা ছাড়াও এই কমিটিতে রয়েছে একে অ্যান্টনি, আহমেদ প্যাটেল, অম্বিকা সোনি, কেসি বেনুগোপাল এবং মুকুল ওয়াসনিক।
অন্যদিকে, কিছুটা ব্যতিক্রমি বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে ‘বিক্ষুব্ধ’ জিতিন প্রসাদের বিষয়ে। সনিয়া গান্ধীকে লেখা বিতর্কিত চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা। তাঁর প্রমোশন হয়েছে। তাকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির স্থায়ী সদস্য করা হয়েছে। জিতিন প্রসাদকে পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামান ও নিকোবরের দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যে যায়গায় এতদিন গৌরব গগৈ দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশে দলের দায়িত্বে বহাল থাকছেন অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তেলেঙ্গানায় নতুন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক করা হয়েছে রাহুল গান্ধীর ঘণিষ্ঠ তরুণ নেতা মণিকম টেগোরকে।
এবারে প্রশাসনের দায়িত্ব পবণকুমার বনশলের উপরে ছেড়ে দিয়েছেন সনিয়া। এছাড়া এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক হরিশ রাওয়াত পঞ্জাব, তারিক আনোয়ারকে কেরালা ও লাক্ষাদ্বীপ, জীতেন্দ্র সিং অসম এবং ওমেন চান্ডিকে অন্ধ্রপ্রদেশে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অধীর চৌধুরীকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ওই কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ২২ জনের মধ্যে নতুন সদস্যরা হলেন দিগ্বিজয় সিং, রাজীব শুকলা, মণিকম টেগোর, প্রমোদ তিওয়ারি, জয়রাম রমেশ, এইচ কে পাটিল, সলমন খুরশিদ, পবণ কুমার বনশল, দীনেশ গুন্ডুরা ও কুলজিৎ নাগরা।