দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অক্সফোর্ডের ‘কোভিশিল্ড’ নামক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রয়োগ অনিশ্চিত হলেও তেলেঙ্গানা ভিত্তিক ভারত বায়োটেক (বিবিএল) কিছুটা হলেও আসার আলো দেখাচ্ছেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে কোভিড-১৯ এর দেশীয় টীকা ‘কোভাক্সিনের’ পশু পরীক্ষা (Animal Trial) সফল হয়েছে। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানিটি বলেছে যে কোভাক্সিন ওই পশুদের মধ্যে “শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা” তৈরি করেছে।
“টিকা প্রার্থীকে (Animal) শক্তিশালী ইমিউন রেসপন্স তৈরি করতে দেখা গিয়েছে। একইভাবে, SARS-COV-2 ভাইরাসের সংস্পর্শে প্রাইমেটদের মধ্যে লাইভ সংক্রমণ এবং সে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে।” কোম্পানি বলেছে যে ফলাফল “একটি সরাসরি ভাইরাল চ্যালেঞ্জ মডেলে প্রতিরক্ষামূলক কার্যকারিতা প্রদর্শন করে”।
ভারত বায়োটেক ২০ টি রেসাস ম্যাকাক বাঁদরের চারটি গ্রুপের মধ্যে এই টিকাকে পরীক্ষা করেছে। প্রাইমেটদের “নিষ্ক্রিয় SARS-COV-2 টিকা’র দুই ডোজের টিকা দেওয়া হয়”।
টিকা নির্মাতা ভারত বায়োটেক বলেন- “গবেষণা’র জন্যে একটি দলকে প্লেসবো দিয়ে পরিচালিত করা হয়, অন্যদিকে তিনটি দলকে ০ এবং ১৪ দিনে তিনটি ভিন্ন টিকা দেওয়া হয়। ২য় ডোজের ১৪ দিন পর সকল ম্যাকাকে বাঁদর এই ভাইরাল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।”
কোম্পানিটি বলেছে, “এই ফলাফলে প্রতিরক্ষামূলক কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে, সার্স-সিওভি-২ নির্দিষ্ট আইজিজি(IgG) বৃদ্ধি এবং এন্টিবডি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে,” কোম্পানিটি আরও বলেছে যে এটি বাঁদরের নাসিকা গহ্বর, গলা এবং ফুসফুসের টিস্যুতে ভাইরাসের প্রতিলিপি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও যোগ করা হয়েছে যে টিকাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীতে (বাঁদরের) নিউমোনিয়ার কোন প্রমাণ দেখা যায়নি।
কোভাক্সিন কি?
বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর জন্য একটি টিকা খোঁজার প্রতিযোগিতায় কোভাক্সিন প্রথম সারির একটি সম্পুর্ণ দেশীয় গবেষণায় তৈরি ভ্যাকসিন। এর পাশাপাশি কোভাক্সিন একটি “নিষ্ক্রিয়” টীকা। এটি মৃত কোভিড-১৯ ভাইরাসের কণা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়, এবং তাই এটি যখন ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হয় তখন সে এই ভাইরাসের সাহায্যে সংক্রমিত বা প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে না। ভারত বায়োটেক বলেন যে এই কণাগুলির ইনজেকশন শরীরকে মৃত ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে কোভাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়। এই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই, টিকা নির্মাতা কোভাক্সিনকে মানব পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায়ে এগনোর জন্য ঔষধ নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্র পান।
একটি টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালের প্রতিটি পর্যায় টিকার নিরাপত্তা এবং তার কার্যকর ইমিউন রেসপন্স বিকাশের ক্ষমতা পরীক্ষা করে। যদিও প্রথম পর্যায়ে সুস্থ অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার উপর মনোযোগ প্রদান করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকার কার্যকারিতার দিকে। আর তৃতীয় পর্যায়ে একটি বৃহত্তর জনসংখ্যার মধ্যে এই টিকার কার্যকারিতার বৃহত্তর দিকগুলি বিবেচনা করা হবে।