ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : দেশীয় গবেষণা ও প্রযুক্তিতে তৈরি ভ্যাকসিনে দেশবাসীর ভরসা জোগাতে, নিজ দেহেই তা প্রয়োগের ঘোষনা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের। সেই গত মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাস এবং লকডাউনের ধাক্কায় থমকে গিয়েছে জনমানসের জীবন অধ্যায়। দিকে দিকে থাবা বসাচ্ছে ভাইরাস। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিদিনই একটার পর একটা নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে দেশে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ হাজার ৩৭২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের হদিশ মিলেছে। ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই মারনভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। তবে ভ্যাকসিন নিয়ে রবিবার অর্থাৎ ১৩ই সেপ্টেম্বর আশার কথা শোনালেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। তিনি আশাবাদী যে,’আগামী বছরের প্রথম তিনমাসের মধ্যেই এই মারণ ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসতে পারে।
তবে যাদের এই ভ্যাকসিন সর্বপ্রথম প্রয়োজন তাদের অপরেই সবার আগে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। করোনা আবহে সাধারণ জনগনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ‘সানডে সংবাদ’ নামে একটি অনলাইন অনুষ্ঠানও শুরু করেন। যেটি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে পরিচালনা করেন।
এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব ছিল গতকাল। আর সেখানে বিভিন্ন ব্যক্তির করা একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন নরেন্দ্র মোদী সহ মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যগন। এই প্রসঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যকর্মী, প্রবীণ নাগরিক এবং অন্যান্য ক্রনিক অসুখে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের সবার আগে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
তবে আদাতে কি সেই ভ্যাকসিন কার্যকরী হবে? হলেও বা কতটা? এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই প্রতিষেধকের উপরে দেশের সাধারণ মানুষ ভরসা করতে না পারলে মানুষের আস্থা অর্জনে প্রথমে ভ্যাকসিনটি তিনি নিজে গ্রহন করতে প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে, যদিও সবার প্রথমে যাঁদের কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন সেই তালিকায় তিনি পড়েন না, কিন্তু দেশবাসীর অবিশ্বাস ভরসা যোগাতে কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথমে সেটি তিনি তাঁর নিজের দেহে প্রয়োগ করবেন।’
প্রসঙ্গত, ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল টেস্টের ট্রায়ালের ক্ষেত্রে সরকার কোনও আপস করবে না বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন। যথেষ্ট পরিমাণে নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে পুরোপুরি ভাবে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সরকার এই টিকার অনুমোদন দেবে বলেও জানিয়েছেন। রবিবার এই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা, তার দাম, মান এবং উৎপাদনের টাইমলাইন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে বিস্তার আলোচনা চলছে’। এবং যাঁদের এই ভ্যাকসিনটি প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি তাঁদেরকেই সবার আগে এই মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আর্থিক সামর্থ্য কোনওভাবে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে না।