দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উত্পাদনকারী সংস্থা হিসেবে খ্যাত ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট (SII) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে যে বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হলে তা ২০২৪ সালের আগে সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে সিরাম ইনস্টিটিউট -এর সিইও আদর পুনাওয়ালা একটি সাক্ষাত্কারে জানালেন, এক বছরের কম সময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার মত পরিকাঠামো ও উত্পাদনে ফার্মা সংস্থাগুলি এই মূহুর্তে মোটেও প্রস্তুত নয়।
তিনি ভারতে এই টিকার বিতরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন যে এই প্রক্রিয়া কঠিন হবে কারণ এই টিকা ১.৪ বিলিয়ন মানুষের কাছে নিরাপদে পরিবহনের জন্য একটি অত্যাধুনিক কোল্ড চেইন ব্যবস্থার অনুপস্থিতি রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি এখনো ৪০০ মিলিয়ন ডোজের বাইরে [ভারতে] এগনোর জন্যে কোন সঠিক পরিকল্পনার কাগজ দেখতে পাচ্ছি না।
স্পুটনিক ভি টীকা উৎপাদনের জন্য রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাথে অংশীদারিত্বের পাশাপাশি এসআই তার টিকা প্রার্থীর ১ বিলিয়ন ডোজ উৎপাদনের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা সহ পাঁচটি বৈশ্বিক ফার্মা কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব করেছে- যার অর্ধেক তারা ভারতের কাছে অঙ্গীকার করেছে ।


আগস্টের ২ তারিখে ডিসিজিআই পুনে ভিত্তিক এসআই-কে করোনাভাইরাস টীকা প্রার্থীর ফেজ ২ এবং ৩ মানব ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার অনুমতি দেয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই টিকা উৎপাদনের জন্য বায়োফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা এই টিকা উৎপাদনের জন্য একটি “রুটিন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরে করোনাভাইরাস টীকার জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পুনরায় শুরু করে।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, পুতিন সহ বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রনেতা নভেম্বরের মধ্যেই বাজারে করোনা ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে যে দাবি করছেন, সেই দাবি মেনে ভ্যাকসিন দিতে হলে পুনওয়ালার মতে, ‘এই গ্রহের সব মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হলে আরও ৪ থেকে ৫ বছর লাগবে।’ যদিও এর আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, প্রত্যেককে দু ডোজ করে ভ্যাকসিন দিতে গেলে বিশ্বে ১৫০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন। তবে পুনাওয়ালার আশঙ্কা, ইউরোপ ও আমেরিকার মত উন্নত দেশ গুলির বিরাট অংশের ভ্যাকসিন প্রি-অর্ডারের জেরে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলি সমস্যায় পড়বে।
আদর পুনাওয়ালা এও বলছেন যে, ‘আমি জানি, এ ব্যাপারে বিশ্ব পজিটিভ কিছু সমাধান চাইছে। কিন্তু কোনও সংস্থাই এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন পরীক্ষার সম্পূর্ণ নিরাপদ চূড়ান্ত পর্যায়ের কাছাকাছি যেতে পারেনি।’
উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে সিরাম ইনস্টিটিউটের চুক্তি অনুযায়ী, অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনের দুটো ডোজের দাম ৩ মার্কিন ডলার ( ভারতীয় মুদ্রায় ২২০ টাকা প্রায়) যা ৬৮টি দেশে ও নোভাভ্যাক্সের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৯২টি দেশে সিরাম ইন্সটিটিউট করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে ।