দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৫ সাল থেকে মোট ৫৮টি বিদেশ সফর করেছেন এবং তাতে মোট ৫১৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
রাজ্যসভায় একটি লিখিত উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ভি মুরালেধরন ২০১৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করেছেন, যার মধ্যে এই বিদেশ সফরের ফলাফল ও অন্তর্ভূক্ত আছে । পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে মোট ব্যয় ছিল ৫১৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
মুরালেধারনের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন দেশে পাঁচটি সফর করেছেন এবং সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী’র মতো আরও কয়েকটি দেশেও প্রধানমন্ত্রীর একটি বা দুটি করে সফর রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর গুলোর মধ্যে কিছু সফর ছিল বহুজাতিক সফর, আর কিছু ছিল একাকী দ্বিপাক্ষিক সফর। মোদীর শেষ বিদেশ সফর ছিল ২০১৯ সালের ১৩-১৪ নভেম্বর ব্রাজিলে, যেখানে তিনি প্রভাবশালী গ্রুপিং ব্রিকস (ব্রাজিল-রাশিয়া-ভারত-চীন-দক্ষিণ আফ্রিকা) একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
মুরালেধরন বলেন, মোদীর এই সফর দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বহি:বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন, এই সফর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং জনগণের সাথে যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে বিদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক মজবুত করতে সাহায্য করেছে।
মন্ত্রী বলেন, “এর ফলে তারা ভারতের জাতীয় উন্নয়ন এজেন্ডায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আমাদের জনগণের কল্যাণের উন্নয়নে অবদান রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত এখন জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তঃজাতীয় অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ, সাইবার নিরাপত্তা এবং পারমাণবিক অপ্রসারণ সহ বহুপাক্ষিক পর্যায়ে বৈশ্বিক এজেন্ডা প্রণয়নে অবদান রাখছে এবং আন্তর্জাতিক সৌর জোটের মত বৈশ্বিক বিষয়ে তাদের নিজস্ব অনন্য উদ্যোগের প্রস্তাব করছে।”
নেপাল নিয়ে একটি পৃথক প্রশ্নের উত্তরে, মুরালেধরন বলেন যৌথ ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি, ঘনিষ্ঠ মানুষের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেশী দেশের সাথে ভারতের পুরনো সম্পর্ক “অনন্য এবং বিশেষ”। উভয় দেশ জনগণের বন্ধন, পারস্পরিক নিরাপত্তা এবং ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কর বন্ধনে আবদ্ধ।
ভারতের উপর নির্ভরতা কমাতে গত কয়েক বছরে নেপাল চীনের সাথে বেশ কয়েকটি ট্রানজিট ও পরিবহন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাঠমান্ডুর সাথে নয়াদিল্লির সম্পর্ক তাদের নিজস্ব যোগ্যতায় টিকে রয়েছে।
মুরালেধরন আরও বলেন যে “নেপালের বৈশ্বিক বাণিজ্যের দুই-তৃতীয়াংশ ভারতের সাথে এবং নেপালের তৃতীয় দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি আমদানি-রপ্তানি ট্রানজিট ভারতের মাধ্যমে। তিনি বলেন, নেপালের সাথে ভারতের সম্পর্ক তাদের নিজস্ব মেধার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে এবং তৃতীয় দেশগুলোর সাথে নেপালের সম্পর্ক থেকে সেই সম্পর্ক সম্পুর্ণ স্বাধীন।
উল্লেখ্য, মে মাসে একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র তৈরি করার পর নেপালের সাথে ভারতের সম্পর্ক চাপের মুখে পড়ে, যেখানে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ, কালাপানি এবং লিম্পিয়াধুরাকে তার অঞ্চল হিসেবে দেখানো হয়। ভারত জানায় যে উত্তরাখণ্ডে নেপালের সীমান্ত বরাবর এই এলাকা ভারতেরই অন্তর্গত।