দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সব থেকে কুখ্যাত ও কালিমালিপ্ত অধ্যায়ের অবসান হতে চলেছে আজ। আজ দীর্ঘ আঠাশ বছর ধরে চলা মামলার রায় ঘোষণা’র দিন ধার্য হয়েছে আজ। অধীর অপেক্ষার অবসান হবে বুধবার লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে। এই কোর্টেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দায়ে অভিযুক্তদের প্রতি রায় দেবেন বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব। সূত্রের খবর অভিযুক্ত ৩২ জনের মধ্যে ২৬ জন আদালতে উপস্থিত থাকবেন।
এই স্পর্শকাতর মামলাকে কেন্দ্র করে অনেক ওঠাপড়া দেখেছে ভারতের মানুষ। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে লখনউয়ের আদালত চত্বরকে। তবে সূত্রের খবর শরীরিক অসুস্থতার জন্যে উপস্থিত থাকতে পারবেন না অভিযুক্ত বিজেপির চার প্রবীণ নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন মামলায় অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আডবানি, মুরলী মনোহর যোশী, কল্যান সিং ও উমা ভারতী। এমনকি থাকতে পারবেন না রাম জন্মভূমি ট্রাষ্টএর অধ্যক্ষ নৃত্য গোপাল দাসও। উল্লেখ্য এই ৩২ অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই বাবরি মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, দাঙ্গা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি সহ একগুচ্ছ ধারা আরোপ করে মামলা চলছে।
তবে আজকের এই ঐতিহাসিক রায় শোনার জন্যে আদালতে অভিযুক্ত ও দুই পক্ষের আইনজীবী ছাড়া অন্যরা থাকতে পারবেন না। তবে জানা গিয়েছে কোভিড পজিটিভ হওয়ার কারণে আসতে পারবেন না কল্যান সিং ও উমা ভারতী। আর সদ্য করোনা থেকে সেরে ওঠায় শারীরিক দুর্বলতার কারণে আসবেন না নৃত্য গোপাল দাস ও।
যদিও এই ঘটনা যে বিষয় কে কেন্দ্র করে ঘটেছিল সেই রাম মন্দির নির্মাণের জন্যে ২০১৯ সালের ৯’ই নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ মঞ্চের প্রতি ই রায় দেয়। সেখানে গত আগস্ট মাস থেকে কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু যে জমিতে হচ্ছে সেই নির্মাণ, একদা সেখানেই ছিল বাবরি মসজিদ। আর সেই মসজিদ ধ্বংসের মামলা এখনও চলছে। উল্লেখ্য ১৯৯২ সালের ৬’ই ডিসেম্বর এই বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের সাথে যুক্ত ৩২ জন অভিযুক্ত।
এই মামলার অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বেরের শুরুতেই এই ৩২ জন অভিযুক্তের জবানবন্দি রেকর্ড করে সিবিআই এর বিশেষ আদালত। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার রায় দেওয়ার সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর অবধি এগিয়ে দেয়। যদিও গত ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই কে জানিয়েছিল যে আগামী ন’ মাসের মধ্যেই এই রায় ঘোষণা করতে হবে। পরে অবশ্য বিচারকের আর্জিতে পরিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিচার করে সেই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়।
প্রসঙ্গত ২০০১ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি রায়ে আডবানি সহ অন্যান্য নেতার বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পেছনে ষড়যন্ত্র করার যে অভিযোগ তা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু এই রায় ত্রুটিপূর্ণ বলে ফের নতুন করে ফৌজদারি মামলা চালু করার জন্য সিবিআইয়ের আর্জিতে সায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ১৯’শে এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় দৈনিক শুনানি করার নির্দেশ দেয়। সুপ্রীম কোর্ট এও বলেছিল যে বাবরি মসজিদের পতন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতায় বড় ধাক্কা।